'আধার কার্ড নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ নয়।' নির্বাচন কমিশনের অবস্থানকে মান্যতা দিয়ে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন নিয়ে মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ভারতের নাগরিক হিসেবে আধার কার্ডকে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। আধার আইনের ৯ ধারা দেখলেই তা স্পষ্ট বোঝা যাবে।
আরও পড়ুন-পাকিস্তান ফের খোরাক! পরমাণু হুমকির মধ্যেই এল সিন্ধুর জলের আবদার
বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশন বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন করে লাখ লাখ নাম বাতিল করেছে। এই মর্মে বেশ কিছুদিন আগেই অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রাইটস, তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন এর আগেই আদালতে জানিয়েছিল, আধার কখনও স্থায়ী বাসিন্দার উপযুক্ত প্রমাণ হতে পারে না। তাই আধার কার্ড থাকলেই ভোটদানের অধিকার থাকতে পারে না। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ কমিশনের সেই যুক্তিকেই সমর্থন করেছে। আবেদনকারীদের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দেন যে, আধার, রেশন এবং সচিত্র পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও ভোট আধিকারিকরা সেগুলি কোনও প্রমাণ বলেই গ্রহণ করতে চাইছেন না। এর জবাবে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, 'এই নথিগুলি প্রমাণ করে যে আপনি ওই এলাকায় বাস করেন।' তিনি আরও বলেন, 'বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে উপভোক্তার শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে আধার বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে। পরিচয় যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হিসাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু বৈধ নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। কোনও আবেদনকারী বা ভোটার আধার দেখিয়ে নিজেকে নাগরিক হিসাবে দাবি করতে পারেন না। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে যা বলেছে তা সঠিক।'
আরও পড়ুন-পাকিস্তান ফের খোরাক! পরমাণু হুমকির মধ্যেই এল সিন্ধুর জলের আবদার
নির্বাচন কমিশনের তরফে আদালতে হাজির প্রবীণ আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, এ ধরনের কাজে কিছু ভুলভ্রান্তি থেকে যায়। তবে ৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে তা শুধরে নেওয়া যাবে।এই ধরনের ভোটার তালিকা সংশোধনের অধিকার বা ক্ষমতা কমিশনের আছে কিনা, এই বিষয়ে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ইসিআইয়ের যদি এই ক্ষমতা না থাকত তাহলে সেখানেই বিষয়টি শেষ হয়ে যেত। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের সেই অধিকার থেকে থাকে তাহলে এই প্রক্রিয়ায় আদালতের কোনও আপত্তি নেই।এর আগের শুনানিগুলিতেও সুপ্রিম কোর্ট কনসিডার করতে বলেছিল, বাকি ডকুমেন্টগুলির মধ্যে, আধারকেও কনসিডার করা হোক। তার আধারকে কনসিডার করছেন, কিন্তু তার সঙ্গে আরও কিছু ডকুমেন্টস দিতে হবে। শুধুমাত্র আধার কার্ডের উপর ভিত্তি করে তাঁরা ভোটার তালিকায় নাম তুলবেন না, এরকম একটা অবস্থান নিয়ে চলে এল নির্বাচন কমিশন। তার কারণ ছিল, অনেক জায়গায় ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি হয়ে রয়েছে, এটা তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে বলেছিলেন।