রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আইপিএল জয়ের পর কথা ছিল, আনন্দ উৎসবের। সেই মতো মঙ্গলবার রাত গড়াতেই বেঙ্গালুরুর দলটির আইপিএল নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই শহরের প্রায় সব প্রান্তেই আতসবাজির আলো আর শব্দ জায়গা করে নিয়েছিল। অকাল দিওয়ালির আনন্দে মেতেছিলেন আরসিবির ভক্ত ও বিরাট কোহলিভক্তরা। কিন্তু ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই মোড় নেয় মর্মান্তিক ঘটনায়।
আনন্দ উৎসবের মধ্যেই খবর আসতে শুরু করে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার। কারণ বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় এত মানুষের ভিড় জমে গেছিল, আরিসিবির আইপিএল জয়ের উৎসবে সামিল হওয়ার জন্য, যে কর্ণাটকের পুলিশের পক্ষে তা আর সামাল দিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।
ইতিমধ্যেই পুরো বিষয়টি নিয়েই তদন্ত শুরু হয়েছে, চলছে একে ওপরের দিকে আঙুল তোলার পালাও। এর মধ্যে পুলিশও যেমন দায় এড়াতে পারছে না, তেমনই কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের দিকেও আঙুল উঠছে। একটা আনন্দের ঘটনা থেকেই এমন মর্মান্তিক আকার নিতে পারে কোনও বিষয়, সেটার বিন্দুমাত্র অনুমানও হয়ত করতে পারেননি বিরাট কোহলির দলের ফ্র্যাঞ্চাইজি ওনার বা শীর্ষকর্তারা।
ইতিমধ্যেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কয়েকজন শীর্ষকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং গ্রেফতারিও শুরু হয়েছে। পদপিষ্টের ১১ জনের মৃত্যুর কারণ খুঁজছে পুলিশ। এই আবহেই এবার এ শঙ্কর এবং ইএস জয়রাম নিজেদের রাজ্য সংস্থার পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। সরাসরি এই বিষয়ে তাঁদের কোনও হাত না থাকলেও, যেহেতু তাঁরা KSCA-র কর্তা, তাই দায় নিয়ে নিজেরা সরে দাঁড়ালেন পদ থেকে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে তাঁরা দুজনে জানিয়েছেন, যে তাঁরা ইতিমধ্যেই KSCA-র সভাপতির কাছে নিজেদের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, ‘গত দুই দিনে যে অনভিপ্রেত এবং অপ্রত্যাশিত, দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে চলেছে, সেখানে আমাদের দায়িত্ব এবং ক্ষমতা অত্যন্ত সিমিত ছিল। তবুও আমরা জানাতে চাই, যে ইতিমধ্যএই আমরা সচিব এবং কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছি কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ’।
কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি রঘুরাম ভাট, সচিব শঙ্কর এবং কোষাধ্যক্ষ জয়রাম ইতিমধ্যেই কর্ণাটক হাইকোর্টকে জানিয়েছে যে প্রবেশদ্বার ম্যানেজমেন্ট বা জনতাকে সামলানোর দায়িত্ব রাজ্য সংস্থার ছিল না। আর তাঁরা আরসিবির কাছে আগেই অনুমতি চেয়েছিল যাতে বিধান সৌধা এলাকায় আরসিবির সেই আনন্দ উদযাপনের অনুষ্ঠানটি সেড়ে ফেলা যায়। বিধান সৌধা এলাকায় নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠান চললেও, আরসিবির সোশাল মিডিয়া পোস্টার দেখার পর সমর্থকরা চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমান, আর রাতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। ভিকট্রি প্যারেড এই ঘটনার জেরে বন্ধ হয়ে গেলেও, আরসিবির দর্শকদের মৃত্যুর খবর যখন প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে, তখনও চিন্নাস্বামীর ভিতরে আরসিবির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান জারি থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে।