বিরাট কোহলি যখন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ব্যাট করতে নামলেন, তখন গোটা স্টেডিয়ামে ‘কোহলি, কোহলি’ ধ্বনিতে ফেটে পড়ে। এই শব্দের গর্জনকে অফিসিয়াল ব্রডকাস্টারের ‘শোর মিটার’-এ রেকর্ড হয়, দেখা যায় এটি ১৩৮ ডেসিবেল শব্দ! আইপিএল-এর ইতিহাসে এটি হল অন্যতম জোরালো গর্জন।
কোহলিকে দেখে ওয়াংখেড়ের বিরাট গর্জন (ছবি : রয়টার্স)
সোমবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিরাট কোহলিকে ঘিরে ভক্তদের উচ্ছ্বাস অন্য পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। আইপিএল ২০২৫-এর এক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) যখন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (এমআই) মুখোমুখি হয় তখন ভক্তদের মধ্যে অবাক করা উন্মাদনা দেখা যায়।
বিরাট কোহলি যখন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ব্যাট করতে নামলেন, তখন গোটা স্টেডিয়ামে ‘কোহলি, কোহলি’ ধ্বনিতে ফেটে পড়ে। এই শব্দের গর্জনকে অফিসিয়াল ব্রডকাস্টারের ‘শোর মিটার’-এ রেকর্ড হয়, দেখা যায় এটি ১৩৮ ডেসিবেল শব্দ! আইপিএল-এর ইতিহাসে এটি হল অন্যতম জোরালো গর্জন।
এই উন্মাদনা অনেকটা চেন্নাইয়ের চিপকে মহেন্দ্র সিং ধোনির ‘থালা’ হিসেবে মাঠে নামার সময় ভক্তদের প্রতিক্রিয়ার মতোই ছিল। আসলে কোহলির ওয়াংখেড়ে প্রবেশ ধোনির চেন্নাইয়ে সাম্প্রতিক আগমনের প্রতিধ্বনি ছিল, যেখানে জনতার এমন চিৎকার শোনা গিয়েছিল যে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মালকিন নীতা আম্বানিকেও কান ঢাকতে দেখা গিয়েছিল।
প্রত্যাশা পূরণে কোনও খামতি রাখেননি কোহলি। ৪২ বলে ৬৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি এবং সেইসঙ্গে টি২০ ক্রিকেটে ১৩,০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করে ইতিহাসও গড়েন। প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসাবে এই কীর্তি অর্জন করেছেন বিরট কোহলি। এই কীর্তি গড়ে বিরাট কোহলি ক্রিস গেইল ও কাইরন পোলার্ডের মতো কিংবদন্তিদের ক্লাবে নিজের নাম লিখিয়েছেন।
৩৬ বছর বয়সি বিরাট কোহলির নামের পাশে এখন ৪০২ টি টোয়েন্টি ম্যাচে ১৩,০৫০ রান রয়েছে। এই সময়ে তিনি ৯টি সেঞ্চুরি ও ৯৯টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। বিরাট কোহলির জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে, আর ওয়াংখেড়েতে ভক্তদের গর্জন ছিল বিরাট কোহলির কিংবদন্তি হয়ে ওঠার আরও একটি বড় প্রমাণ।
অন্যদিকে, আইপিএল ২০২৫-এর এই ম্যাচে রোহিত শর্মার ব্যাটে রানের খরা চলছেই। এবারের ১৮তম আইপিএলে ব্যাট হাতে চরম খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক। ২২২ রান তাড়া করতে নেমে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শুরু করেছিলেন রোহিত শর্মা। প্রথম ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারকে ছক্কা হাঁকান। পরের ওভারে, যেটি করেছিলেন যশ দয়াল, সেখানে টানা দুই চার মেরে রোহিত জানান দিলেন, আজ হতে পারে তাঁর রাত।
কিন্তু যশ দয়াল ঠিক সময়ে জবাব দেন। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে, ইনসুইং ডেলিভারি রোহিতের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে সোজা গিয়ে লেগ স্টাম্পে আঘাত করে। রোহিত ফিরে যান মাত্র ৯ বলে ১৭ রান করে।
হোয়াইট-বল ফরম্যাটে বাঁ-হাতি পেসারদের বিরুদ্ধে রোহিতের দুর্বলতা অনেক দিন ধরেই স্পষ্ট। তাই আরসিবি পরিকল্পনা করেই জোশ হেজেলউডকে সরিয়ে নতুন বলে যশ দয়ালকে আক্রমণে আনেন। রোহিত আউট হওয়ার পর দয়ালকে সরিয়ে দেন এবং মাঠে আনেন অস্ট্রেলিয়ান পেসারকে। এই পদক্ষেপ স্পষ্ট করে দেয়, দয়ালের ওভার ছিল একান্ত রোহিতের জন্যই পরিকল্পিত।
তবে এই ম্যাচে খেলার আগে রোহিতকে ক্লিয়ার করা হয়েছিল এবং তিনি গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে মাঠে নামেন। গত পাঁচটি আইপিএল আসরে ব্যাট হাতে রোহিতের পারফরম্যান্স হতাশাজনক ছিল। শুধুমাত্র গত মরশুমেই তিনি ৪০০ রানের গণ্ডি পেরিয়েছিলেন। বাকি বছরে তাঁর রান ছিল গড়পড়তা বা তারও কম।