মিচেল মার্শ এদিনের ম্যাচের পরে বলেন, ‘সে নিজেই স্বীকার করবে যে এ মরশুমটা তার মতো করে হয়নি। তবে আমরা জানি, ও দুর্দান্ত খেলোয়াড়—অসাধারণ প্রতিভাবান। তাই আশা করছি শেষ দুটি ম্যাচে ওর কাছ থেকে দুর্দান্ত কিছু দেখতে পাবো।’
লখনউ সুপার জায়ান্টসের (LSG) অধিনায়ক ঋষভ পন্তের জন্য আইপিএল ২০২৫ মরশুমটি হতাশাজনকভাবে শেষ হল। ১৯ মে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের (SRH) বিরুদ্ধে ছয় উইকেটের পরাজয়ের ফলে পন্তের লখনউ সুপার জায়ান্টস প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যায়। আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৭ কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে নজির গড়লেও পন্ত পুরো মরশুম জুড়েই ছন্দে ছিলেন না। ১২ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ মাত্র ১৩৫ রান। দলের দুর্বল পারফরম্যান্স সত্ত্বেও সতীর্থ মিচেল মার্শ পন্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মার্শ জানান বাকি ম্যাচগুলোয় দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করবেন ঋষভ পন্ত, এই বিষয়ে আশাবাদী মিচেল মার্শ।
লখনউয়ের একানা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একটি ‘জিততেই হবে’ ম্যাচে লখনউ সুপার জায়ান্টস ২০৫/৭ রানের প্রতিযোগিতামূলক স্কোর তোলে। তবে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ সহজেই লক্ষ্য তাড়া করে ছয় উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয়। এর ফলে এলএসজির প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। পন্তের মাত্র ৭ রানে আউট হওয়াটা মরশুমের হতাশার তালিকায় আরেকটি সংযোজন হয়। ম্যাচ চলাকালীন এলএসজি মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে দলের পারফরম্যান্সে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেডিয়ামের ব্যালকনি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে পন্ত দলের অস্থির পারফরম্যান্সের জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের চোটকে দায়ী করেন। এই সময়ে তিনি বলেন, ‘সময় যত গড়িয়েছে, চ্যালেঞ্জ ততই বেড়েছে।’ পন্ত উল্লেখ করে বলেন মহসিন খান ও মায়াঙ্ক যাদবের অনুপস্থিতির কথা। যথাযথ বিকল্পের অভাব ও চলতি ফিটনেস সমস্যা দলকে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ছন্দ ধরে রাখতে বাঁধা দিয়েছে বলে মনে করে লখনউ সুপার জায়ান্টসের ক্যাপ্টেন।
তবু ঋষভ পন্তকে নিয়ে আশাবাদী মিচেল মার্শ। মার্শ এদিনের ম্যাচের পরে বলেন, ‘সে নিজেই স্বীকার করবে যে এ মরশুমটা তার মতো করে হয়নি। তবে আমরা জানি, ও দুর্দান্ত খেলোয়াড়—অসাধারণ প্রতিভাবান। তাই আশা করছি শেষ দুটি ম্যাচে ওর কাছ থেকে দুর্দান্ত কিছু দেখতে পাবো।’
এলএসজির অন্যতম ধারাবাহিক ব্যাটার মিচেল মার্শ দলের শক্তির জায়গায় মনোযোগ ধরে রাখার আহ্বান জানান এবং বাকি ম্যাচগুলো ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলতে বলেন। তিনি আরও বলেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্কোরিংয়ের ধরন বদলে যাচ্ছে এবং এখন ২৩০ রানকেও ‘প্যার স্কোর’ হিসেবে ধরা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘উচ্চ স্কোরের চাপ সামলে আমাদের নিজেদের পরিকল্পনায় স্থির থাকতে হবে।’
এছাড়া, এলএসজির অভ্যন্তরীণ অশান্তিও তাদের অভিযানকে প্রভাবিত করেছে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল তরুণ ক্রিকেটার অভিষেক শর্মা ও দিগ্বেশ রাঠির মধ্যে মাঠে উত্তপ্ত ঝগড়া। এই ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা হস্তক্ষেপ করেন এবং দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সফল হন।
এখন এলএসজি তাদের শেষ দুটি ম্যাচ খেলবে গুজরাট টাইটান্স ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। যদিও দল প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে, তবে এই ম্যাচগুলো নিজেদের ফর্মে ফেরার সুযোগ হিসেবে দেখছে খেলোয়াড়রা। বিশেষ করে ঋষভ পন্ত চেষ্টা করবেন সমালোচকদের জবাব দিতে এবং মরশুম শেষ করতে ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে।
সার্বিকভাবে, ঋষভ পন্তের আইপিএল ২০২৫ অভিযান ছিল নানা চ্যালেঞ্জে ঘেরা—ব্যক্তিগত ব্যর্থতা, চোটের কারণে দলের সমস্যা এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা। তবুও, মিচেল মার্শের মতো সতীর্থদের সমর্থন এবং নিজের প্রত্যাবর্তনের জেদ পন্তকে শেষ ম্যাচগুলোয় জ্বলে ওঠার সুযোগ করে দিতে পারে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।