ভারতের প্রাক্তন সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার জানিয়েছেন, ওডিআই অধিনায়ক রোহিত শর্মা তাঁকে বলেছিলেন, যেন তিনি কেএল রাহুলের সঙ্গে কাজ করেন এবং তাঁর মধ্যে আরও ‘আগ্রাসী’ মনোভাব গড়ে তোলেন।
কেএল রাহুল সম্প্রতি তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা দিয়ে সকলকে মুগ্ধ করেছেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেডিংলিতে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ১৩৭ রান করেন ২৪৭ বলে, যা ছিল একেবারে চোখ জুড়ানো ইনিংস। গৌতম গম্ভীরের কোচিং স্টাফে প্রাথমিকভাবে যুক্ত থাকা নায়ার ESPNcricinfo-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যখন আমি কোচিংয়ের ভূমিকা নিতে শুরু করি, তখন রোহিত আমার সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান যে, তিনি খুবই আগ্রহী ছিলেন আমি যেন কেএল রাহুলের সঙ্গে কাজ করি এবং তাঁর খেলায় একটা আগ্রাসী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলি। কারণ, তিনি বিশ্বাস করতেন রাহুল ভবিষ্যতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, বিশ্বকাপ, বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি ও ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে বড় ভূমিকা পালন করবেন।’
অস্ট্রেলিয়ায় ৩-১ সিরিজ হারের পর বিসিসিআই পর্যালোচনার মাধ্যমে অভিষেক নায়ারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। রাহুলের কঠিন সময় ও অভিষেক নায়ার দারুণ ভাবে সাপোর্ট করেছিলেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে রাহুল প্রথম টেস্টে আউট হন লেগ সাইডে এক দুর্বল শটে। দ্বিতীয় ইনিংসে অসাধারণ এক ডেলিভারিতে ফেরেন। এরপর ঋষভ পন্ত ও সরফরাজ খান আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দাপট দেখান, কিন্তু ভারত ম্যাচ হেরে যায় এবং রাহুল বাদ পড়েন পরবর্তী দুই ম্যাচ থেকে।
এই সিরিজেই ভারত ৩-০ ব্যবধানে হারে। অভিষেক নায়ার বলেন, ‘সেই সময়টা আমাদের সম্পর্কের শুরু। অস্ট্রেলিয়া সফরটা রাহুলের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, যদি ওখানেও রান না করত, তাহলে ওর কেরিয়ার কোথায় যেত সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠত। তখন ও টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড থেকেও বাদ ছিল।’
নায়ার আরও বলেন, ‘আমি ওকে বলেছিলাম, আমাদের হাতে অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে ১৫ দিন রয়েছে। সেখানে পৌঁছে আরও ১০ দিন পাব, অর্থাৎ আমাদের কাছে একটা মাসের মতো সময় আছে নিজেকে প্রস্তুত করার। এখন বলো, তুমি কী করতে চাও, কেমনভাবে প্রস্তুতি নিতে চাও?’
তিনি আরও বলেন, ‘ও নিজের পুরনো অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনার কথা বলেছিল, আর আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি দিই—যা ওর থেকে একদম আলাদা ছিল। দীর্ঘ কথোপকথনের পর ধীরে ধীরে ও আমাকে বিশ্বাস করতে শুরু করে। ওর ব্যাটিংয়ের দৃষ্টিভঙ্গি, স্টান্স, ক্রিজে অবস্থান, কোন গার্ড নেয়—সবকিছুতেই আমরা ধীরে ধীরে কাজ করি।’
মাইন্ডসেট ও ট্যাকটিক্যাল অ্যাডজাস্টমেন্ট
নায়ার জানালেন, তিনি ঠিক কী বদল এনেছেন সেটা পুরোপুরি প্রকাশ করবেন না, কিন্তু একটা ঝলক দিয়ে তি বলেন, ‘আমি সবসময় প্রথমে স্কিলের ওপর কাজ করি এবং তারপর সেই স্কিলকে মাধ্যম করে মানসিক প্রস্তুতির ওপর জোর দিই। প্র্যাকটিসের মাধ্যমে মস্তিষ্কে আত্মবিশ্বাস জোগানো হয় যে প্ল্যানটা রয়েছে সেটা কার্যকর করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারপর ছোট ছোট ট্যাকটিক্যাল বিষয় যোগ করা হয় যাতে সে ব্যাটিংয়ের সময় ফলাফলের কথা না ভেবে শুধুমাত্র পরিকল্পনাগুলো কার্যকর করাতেই মনোযোগ দেয়।’ এই মুহূর্তে কেএল রাহুল আবারও জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা করতে সক্ষম হয়েছেন এবং অভিষেক নায়ারও তাঁর পিছনের অবদান নিয়ে গর্বিত।