কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পৈশাচিক, নৃশংস জঙ্গি হামলায় এখনও পর্যন্ত অন্তত ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু'জন বিদেশি রয়েছেন বলেও দাবি সূত্রের। আর, শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, নিহতদের এই তালিকায় অন্তত তিনজন এমন রয়েছেন, যাঁরা আমাদের এই রাজ্য - পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে দু'জন কলকাতার বাসিন্দা এবং একজন পুরুলিয়ার মানুষ।
সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে, এঁরা সকলেই নিজেদের পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন ভূস্বর্গে। কিন্তু, তিনজনের একজনও আর পরিবারের সঙ্গে ঘরে ফিরতে পারলেন না!
এই তিনজন হলেন - বেহালার সখের বাজার এলাকার বাসিন্দা সমীর গুহ। ৫২ বছরের সমীর ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। দিন কয়েক আগে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই 'টার্গেট কিলিং'-এর শিকার হতে হল তাঁকে। চোখের সামনে সমীরকে লুটিয়ে পড়তে দেখতে হল তাঁর সহধর্মিণী ও সন্তানকে!
একইভাবে জঙ্গিবাহিনীর গুলির শিকার হয়েছেন এই বাংলার আরও এক তরুণ। তিনি বিতান অধিকারী। আদতে পাটুলির বৈষ্ণবঘাটার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে বিতান থাকতেন আমেরিকার ফ্লোরিডায়। সম্প্রতি বাড়িতে এসেছিলেন। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন কাশ্মীর। 'মানুষখেকো' জঙ্গিরা তাঁকেও প্রিয়জনদের সামনেই মুহূর্তে শেষ করে দিয়েছে! জানা গিয়েছে, বিতানের স্ত্রী ও ছেলে শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে। বিতানের স্ত্রীর সঙ্গে ইতিমধ্য়েই কথা বলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার শিকার, বাংলার তৃতীয় বাসিন্দা হলেন মনীশরঞ্জন মিশ্র। তাঁর বাড়ি পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরোনো বাঘমুণ্ডী রোডে। তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)-তে কর্মরত ছিলেন। চাকরির খাতিরেই থাকতেন হায়দরাবাদে। তাঁর স্ত্রী ও এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। তিনিও পরিবার নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা:
ইতিমধ্যেই কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ (বুধবার - ২৩ এপ্রিল, ২০২৫) এই বিষয়ে আরও একটি এক্স পোস্ট করেন তিনি। তাতে মমতা জানিয়েছেন - শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এই ঘটনায় বাংলার তিন বাসিন্দার নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে তিনি আরও জানিয়েছেন, বাংলার যে পর্যটকরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের দেহ যাতে নির্বিঘ্নে কলকাতায় ফেরানো যায়, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য প্রশাসনের তরফে দিল্লি বিমানবন্দরে সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খুব সম্ভবত, আজ রাত সাড়ে আটটায় মৃতদেহগুলি নিয়ে একটি বিমান কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবে।
নিহত তিন পর্যটকের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মমতা জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।