মুর্শিদাবাদে ফের ধরা পড়ল বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর দল। সোমবার গভীর রাতে রানিতলা থানার পুলিশ শিবনগর ঘাট এলাকার একটি কলাবাগান থেকে চার বাংলাদেশি যুবককে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, বেআইনি পথে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে প্রবেশ করেছিল তারা। তবে দীর্ঘ জেরা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের উদ্দেশ্য নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। পুলিশের অনুমান, সীমান্ত চক্রের দালালদের মাধ্যমেই তারা ভারতে প্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: নারী-পুরুষ-শিশু মিলিয়ে ত্রিপুরায় পাকড়াও ১৫ বাংলাদেশি, জালে ৫ ভারতীয় দালালও
ধৃতদের নাম আলমিন শেখ, সাবির হোসেন, মামন আলি ও মহম্মদ বিপ্লব। চারজনের বয়স ১৯ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমিন শেখের বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার সোনাইকান্দিতে, বাকিদের ঠিকানা একই জেলার বেরপাড়া গ্রাম। ধৃতদের কাছ থেকে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশ তাদের পাঁচ দিনের হেফাজতের আবেদন জানায়।
লালবাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসপ্রিত সিং জানিয়েছেন, তারা কী উদ্দেশ্যে ভারতে ঢুকেছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সীমান্ত অঞ্চলে জাল ভোটার কার্ড ও আধার তৈরির একাধিক চক্র সক্রিয় রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি, সাগরপাড়া, রানিতলা, ভগবানগোলা ও রানিনগর থানা এলাকায় বিস্তৃত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বহু অংশেই কাঁটাতার নেই। খোলা জলসীমান্ত দিয়ে বছরের পর বছর চলে পাচার। বিশেষ করে বর্ষার সময়ে পদ্মার জলে ভাসিয়ে রাতের অন্ধকারে অবাধে পাচারকাজ চলে। সেই পথ ধরেই বহু বাংলাদেশি এদেশে প্রবেশ করছে বলে দাবি স্থানীয়দের। পুলিশের দাবি, অনুপ্রবেশকারীদের বড় অংশ সীমান্তে জাল ভোটার বা আধার কার্ড তৈরি করে নিজেদের পরিচয় গোপন করছে। পরে তারা কেরল, কর্ণাটক, চেন্নাই বা মুম্বই-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ নেয়। কেউ কেউ পাচার চক্রের সঙ্গেও যুক্ত। আবার অনেকে দাবি করেছে, অশান্ত পরিস্থিতি থেকে বাঁচতেই তারা ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে। তবে এর মধ্যে নাশকতার ছক রয়েছে কি না, তা নিয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুধু চলতি এক মাসেই সীমান্ত এলাকায় প্রায় ৩৮ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে পুলিশ। অথচ অনেকে পরিচয় গোপন করে গ্রেফতার এড়িয়ে দেশের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।