গ্রেফতার হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে মানিকতলা থানার পুলিশ। রবিবার রাখাল বেরাকে আদালতে তোলা হবে। ধৃত রাখাল বেরার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাখাল বেরা যখন এই কাজ করেছিলেন তখন শুভেন্দু অধিকারী সেচ দফতরের মন্ত্রী। এমনকী বরাবরই শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিনি। যার ফলে শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে চেনেন না বলতে পারবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তাঁকে গ্রেফতার করে মাথার নাগাল পেতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। তাঁকে জেরা করলে উঠে আসতে পারে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে টাকা দিয়ে সেচ দফতরের চাকরি মিলছে বলে জানতে পারেন অশোকনগরের বাসিন্দা সুজিত দে। চাকরির জন্য যোগাযোগ করেন রাখাল বেরা এবং চঞ্চল বেরার সঙ্গে। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরেও চাকরি পাননি বলে অভিযোগ সুজিতের। তখন রাখাল বেরা ও চঞ্চল বেরার নামে অভিযোগ দায়ের করেন। সুজিত দে অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে সেচ দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে রাখাল বেরা ও চঞ্চল বেরা মোট ২ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। মানিকতলা থানায় তিনি অভিযোগ দায়ের করলে গ্রেফতার করা হয় রাখাল বেরাকে। ইতিমধ্যেই চঞ্চল বেরার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। রাখাল বেরার বাড়ি রামনগরে।পূর্ব মেদিনীপুরে কান পাতলেই শোনা যায়, রাখাল বেরা শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এই বিষয়ে মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, ‘এই তদন্ত আগেই হচ্ছিল। শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রী থাকাকালীন চাকরি দেওয়ার নাম করে কিছু আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল।’ তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথন ও অন্যান্য প্রমাণ হাতে পায়। তার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় রাখাল বেরাকে। এই রাখাল বেরা কলকাতার বড়বাজারে অবস্থিত কন্টাই কো–অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর। এমনকী শুভেন্দু অধিকারীর পিএ হিসাবেও কাজ করেছে। কলকাতায় তাঁর একটি ব্যবসাও রয়েছে। শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তিনি কন্টাই কো–অপারেটিভ ব্যাঙ্কের মাথায় বসতে পেরেছিলেন বলে সূত্রের খবর।একদা রাজ্যের সেচমন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পরে সেই দায়িত্ব সামলেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁরা দু’জনেই এখন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। নবান্ন থেকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি টাকা দিয়ে বারবার বাঁধ সারানো হলেও তা রাতারাতি কেন ভেঙে যাচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। সোমবার সেই রিপোর্ট জমা পড়বে বলে খবর। এরপরই তদন্ত শুরু হতেই গ্রেফতার হয়েছেন রাখাল বেরা। এবার দেখার কান টানলে মাথা আসে কিনা? এতটাই ঘনিষ্ঠ রাখাল যে, নারদকাণ্ডে শুভেন্দুর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই।