একদিকে যখন দিঘার জগন্নাথ ধামের বিগ্রহ নির্মাণের জন্য ওড়িশার পুরুষোত্তম ধামের বিগ্রহ তৈরির জন্য মজুত নিম কাঠ চুরির অভিযোগ উঠছে, তদন্ত শুরু হয়েছে, সেই আবহেই এবার পুরোনো একটি বিতর্ক উস্কে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ। বাংলার সন্তান শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মৃত্যু নিয়ে নতুন করে তদন্তের দাবি তুলে সরব হলেন তিনি!
আজ (রবিবার - ৪ মে, ২০২৫) কুণাল তাঁর একাধিক ভেরিফায়েড সোশাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের অন্তর্ধানরহস্য নিয়ে আবার প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে। চৈতন্যদেবকে কি হত্যা করা হয়েছিল? পুরীতে কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে? পুলিশি তদন্তের হয়ত অবকাশ নেই। কিন্তু ইতিহাসবিদ, গবেষক, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কোনো প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে অনুসন্ধান হতেই পারে। নেতাজির অন্তর্ধানরহস্য নিয়ে এত তদন্ত; বাংলার আরেক ঘরের ছেলে চৈতন্যদেবের মৃত্যু/ অন্তর্ধান রহস্যের খাতাটাও খোলা জরুরি।’
প্রসঙ্গত, শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মৃত্য়ু কীভাবে হয়েছিল, তা নিয়ে আজও রহস্য বিদ্যমান। চৈতন্য মহাপ্রভু ছিলেন মানবতায় বিশ্বাসী। শেষবার তাঁকে জীবিত অবস্থায় পুরীতেই দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, তারপর তাঁকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে কারণে অনেকেই এই ঘটনাকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান বা তথাকথিত মৃত্যুর সমতুল্য রহস্যজনক বলে মনে করেন।
অনেকেই দাবি করেন, শ্রীচৈতন্যদেবকে গুমখুন করা হয়েছিল! কিন্তু, এই দাবি কতটা সত্যি, তা জানা নেই। উঠে এসেছে আত্মহত্যার তত্ত্বও। সেটাও কোনও দিন প্রমাণ হয়নি। আবার মহাপ্রভুর অন্তর্ধান নিয়ে কিংবদন্তীও প্রচলিত আছে। বিশ্বাসীরা সেটাই বিশ্বাস করেন। কিন্তু, বিজ্ঞানসম্মতভাবে মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের আজও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।
আরও রহস্যজনক বিষয় হল - এই বাংলারই সন্তান ছিলেন জয়দেব মুখোপাধ্য়ায়। যিনি ছিলেন একজন স্বনামধন্য চৈতন্য গবেষক। দাবি করা হয়, জয়দেবও মনে করতেন, শ্রীচৈতন্যের মৃত্য়ু স্বাভাবিক ছিল না এবং সেটা আড়াল করতেই কিংবদন্তী প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু, সেই তদন্তের গভীরে পৌঁছানোর আগেই জয়দেব মুখোপাধ্য়ায়েরও রহস্যমৃত্যু হয়! পুরীর একটি আশ্রম থেকে উদ্ধার করা হয়ে তাঁর এবং তাঁর মায়ের নিথর দেহ!
এদিকে, সম্প্রতি দিঘায় যে জগন্নাথ ধাম নির্মাণ করা হয়েছে, তা পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে ইস্কনের হাতে। সেই ইস্কন, যারা মহাপ্রভুর আদর্শে দীক্ষিত। অন্যদিকে, নিমকাঠ চুরি করে দিঘার মন্দিরের জন্য প্রভু জগন্নাথের বিগ্রহ নির্মাণের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই এ নিয়ে মাঠে নেমেছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন! সেই প্রেক্ষাপটে কুণাল ঘোষের এদিনের পোস্ট নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ! এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।