ডার্বি ম্যাচ মানে সম্মানরক্ষার ম্যাচ। একই শহরের দুই দলের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের ম্যাচ। প্রতিযোগিতা বা ট্রফি যেই দলই জিতুক না কেন, ডার্বি ম্যাচ মানেই হচ্ছে সম্মানরক্ষার ম্যাচ। তাই এই খেলায় কোনও দলই সচরাচর হার মানতে চায় না সহজে। সে প্রতিপক্ষ দল শক্তিশালীই হোক না কেন। গোটা বিশ্বের সব খেলাতেই প্রায় ডার্বির চল রয়েছে।
ফুটবলে যেমন রয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি যেখানে সিটিজেন এবং ইউনাইটেডের ফুটবলাররা একে অপরের বিরুদ্ধে খেলে থাকে। যেমন মাদ্রিদের দুই দল অ্যাতলেতিকো এবং রিয়াল মাদ্রিদ পরস্পরের বিরুদ্ধে মরিয়া লড়াই দেয় যখনই তাঁরা মুখোমুখি হয়। ক্রিকেটেও ডার্বি ম্যাচ হামেশাই হয়, কাউন্ডিতে।
IPL, ISL-এও ডার্বি হয়
ভারতীয় ক্রিকেটের ডার্বি বলতে বোঝায় বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্য়ালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বনাম মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচকে। কারণ দুটি এক শহরের দল না হলেও দুই দলই দঃ ভারতীয়। এছাড়াও কেরল ব্লাস্টার্স বনাম চেন্নাইয়িন এফসির ম্যাচ বা বেঙ্গালুরু এফসি বনাম কেরলের ম্যাচকেও ডার্বির তকমা দিয়ে থাকেন অনেকে।
যদিও স্রেফ ভারতীয় ফুটবলই নয়, গোটা বিশ্বফুটবলেই অত্যন্ত জনপ্রিয় এক ডার্বির নাম কলকাতা ডার্বি, যেখানে চিরপ্রতিদ্বন্দী দুই দল মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল একে অপরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয়। বিশ্বের সব প্রান্তে থাকা ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরাই বাঙালির বড় ম্যাচের খোঁজ ঠিক রাখেন। যদিও এবার ইস্টবেঙ্গলের মোহনবাগানের অভিজাত্যের ডার্বিকেই হার মানিয়ে দিল প্যারিস ডার্বি।
সব থেকে কাছাকাছি ডার্বি ছিল মোহনইস্টের
আসলে এতদিন ফুটবল বিশ্বে হওয়া ক্লাব ডার্বি ম্যাচগুলোর মধ্যে সব থেকে কাছাকাছি ক্লাব বলতে ছিল ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। লেসলি ক্লডিয়াস সরণী থেকে বেরোলেই বাঁদিকে ৩ মিনিট হাঁটলেই রয়েছে আরেক শতাব্দী প্রাচিন ক্লাব মোহনবাগান। কিন্তু এবার আর মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল রইল না নিকটতম দুই ডার্বির দল।
মাত্র ১৯৩ মিটার দূরে প্যারিস ক্লাবের মাঠ
এবার সেই স্থান দখল করে নিল ফ্রান্সের লিগ ওয়ানের দুই ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইন এবং প্যারিস ফুটবল ক্লাব। পিএসজির হোম গ্রাউন্ড পার্ক দ্য প্রিন্স থেকে নতুন প্যারিস এফসির মাঠের বর্তমান দূরত্ব মাত্র ১৯৩ মিটার, তাই ফুটবল ফ্যানরা ইতিমধ্যেই এই ডার্বিকে বিশ্বের নিকটতম ডার্বির দুই প্রতিদ্বন্দীর তকমা দিয়ে দিয়েছেন।
আগে ঘরের মাঠেই ম্যাচ খেলত ইস্টমোহন
এমনিতেও দুই ক্লাব পাশাপাশি থাকলেও কলকাতার দুই প্রধান এখন আর নিজেদের ঘরের মাঠে সিনিয়র ডার্বি খেলেনা নিরাপত্তাজনিত কারণে। কয়েক বছর আগেও জুনিয়র ডার্বি ঘিরেই উত্তাল হয়েছিল ময়দান। এখন দুই প্রধান সল্টলেকেই সব ডার্বি খেলে, যেমনটা ইতালির সান সিরো স্টেডিয়ামে এসি মিলান এবং ইন্টার মিলান খেলে থাকেন। অবশ্য অতীতে ইডেন গার্ডেন্সে দুই প্রধান বহুবার মুখোমুখি হয়েছে। ১৯৮০র দশক পর্যন্ত একে অপরের মাঠে গিয়েও খেলা দেখত দুই দলের সমর্থকরা। এখনও অবশ্য সেটা আর সম্ভব হয়না, তাই ফরাসি লিগের দুই ক্লাবই আপাতত বিশ্বের নিকটতম ডার্বির চিরপ্রতিদ্বন্দীর জায়গা করে নিচ্ছে।