এক থানা এলাকায় অপরাধ করে আর এক থানা এলাকায় গা–ঢাকা দেওয়া, কোনও ব্যক্তির অথবা মহিলার দেহ এক থানা এলাকায় মিলল অথচ তিনি অন্য থানা এলাকার বাসিন্দা—এসব ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে তথ্য পেতে বেশ সময় লেগে যায়। সুতরাং তদন্ত গতি পায় না। খুন করে অন্য থানা এলাকায় দেহ ফেলে রাখার ঘটনাও এই রাজ্যে ঘটে। আবার অপরাধ করে ভিন রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার নজিরও আছে। এসব নানা ঘটনার সহজ কিনারা এবং তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে এবার রাজ্য পুলিশ নিয়ে এল ‘লোকাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’।
লোকাল থানাগুলির মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান করার জন্যই এই ‘লোকাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামের নতুন পোর্টাল নিয়ে আসছে রাজ্য পুলিশ। তাতে শুধু স্থানীয় স্তরেই উপকার হবে এমন নয়। বরং লালবাজারকে তথ্য দিতেও সময় লাগবে না। এমনকী কোনও মামলার তথ্য বা তদন্তের বিষয়টিও মিলবে খুব সহজে। কারও ঠিকানা থেকে শুরু করে যাবতীয় তথ্য দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছে যাবে তদন্তকারী অফিসারের কাছে। আর সবটাই মিলবে এই পোর্টালের মাধ্যমে। সুতরাং মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা যাবে। এই পোর্টালের সঙ্গে পুলিশকর্তাদের অভ্যস্ত করে তুলতে চলছে প্রশিক্ষণ বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: বিধানসভার অধিবেশনে ‘অপারেশন সিঁদুর’, বিলে রাজ্যপালের স্বাক্ষরে সংশোধনী প্রস্তাব!
এই পোর্টাল পুলিশ অফিসার ছাড়া বাইরের কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। এটা সম্পূর্ণ পুলিশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই এটা অত্যন্ত গোপনীয় বিষয়। সাধারণ মানুষ তা অ্যাকসেস করতে পারবেন না। এই ‘লোকাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ পোর্টালে পুলিশ মহলে ব্যাপক উপকার হবে। ব্যারাকপুর পুলিশ জেলার কোনও থানায় একটি অভিযোগ হলে সেই মামলার অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের কোনও থানা এলাকায় গা–ঢাকা দিয়ে থাকে তাহলে সেখানকার পুলিশ অফিসার ওই মামলা নিয়ে যাবতীয় তথ্য লিখে পোর্টালে আপলোড করে দেবেন। যে থানার প্রয়োজন, সেই থানাকে ট্যাগ করে দিলে সেখানের আইসি সেটা দেখতে পারবেন।
এমনকী যাবতীয় তথ্য, নথি পর্যন্ত পেয়ে যাবেন সংশ্লিষ্ট থানার আইসি বা ওসি। এটা কাজের ক্ষেত্রে অনেকটা সহজ হবে। এভাবেই তথ্য আদানপ্রদানের কাজ খুব সহজে করা যাবে। এতদিন এই কাজ করতে থানাগুলি ফোন বা ইমেল করে তথ্য সংগ্রহ করত। এতে সময় লাগতো বিস্তর। এই পোর্টালের মাধ্যমে কোনও একটি থানা রাজ্যের সব থানাকে এখানে ট্যাগ করতে পারবে। আর ট্যাগ করলেই সংশ্লিষ্ট থানাকে তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দিতে হবে। এতে থানাগুলির মধ্যে একটা সুন্দর সমন্বয় গড়ে উঠবে বলে মনে করছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা।