বিতর্কের কেন্দ্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হস্টেল। এবার মেন হস্টেলের রান্না করা খাবারে বিছে পাওয়া গেল বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, রাতের খাবারে বসে এক ছাত্র ভাতের থালায় বিছে পান। খাবার এরকম বিছে দেখেই বমি হতে শুরু করে ছাত্রটির। ঘটনায় তাঁকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুর, নেপথ্যে কারা?
এই ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল খাবারের গুণমান এবং স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পড়ুয়াদের মধ্যে। অভিযোগ, এর আগেও ছাত্রীদের হস্টেলে এমন ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার খাবারে প্রায় এক সপ্তাহ আগে খাবারে বিছে পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। জানা যায়, শনিবার রাতে সংস্কৃত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র খাবার নিতে গিয়ে হঠাৎই নিজের পাতে বিছে দেখতে পান। ঘটনার জেরে ছাত্রটি বমি করতে শুরু করেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন । সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায় জানিয়েছেন, সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্তের নির্দেশে ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কীভাবে রান্নার খাবারে বিছে মিলল, তা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে হস্টেলের সামগ্রিক পরিচ্ছন্নতা এবং খাবারের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
রজত রায় জানান, এক জায়গায় দীর্ঘদিন কাজ করলে কর্মীদের মধ্যে মনোযোগের অভাব দেখা যায়, ফলে গাফিলতির সম্ভাবনাও বাড়ে। তাই কিছু কর্মীকে বদলি করা হবে। হস্টেলের সুপারদের নিয়মিত রান্নাঘরের অবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষকদের মাধ্যমে হস্টেলের রান্নার কর্মীদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে মেন হস্টেলে প্রায় ৬০০ জন আবাসিক থাকেন। যদিও কিছু ব্লকে সংস্কার কাজ চলায় বসবাসকারী ছাত্রদের সংখ্যা কিছুটা কম রয়েছে। অনেকজনের খাবার একসঙ্গে প্রস্তুত করতে গিয়ে যাতে এমন অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা অভিনব বসু জানান, এই ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগের। এর আগেও একাধিকবার খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ইমেল করে জানানো হয়েছে। ছাত্রদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কোনও ভাবেই অবহেলার জায়গা হতে পারে না।