গবেষক ছাত্র অনমিত্র রায়ের আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার) কলকাতার ঘটনায় বিতর্ক যেন থামছে না। ঘটনার তদন্ত ও কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর এবার ‘ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স’ পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন আইসারের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির চেয়ারম্যানও।
আরও পড়ুন: খড়্গপুর IIT-তে ফের ছাত্র মৃত্যু, শ্বাসনালীতে ওষুধ আটকে মৃত ২য় বর্ষের পড়ুয়া
সূত্রের খবর, অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিটিও ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং নতুন কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছিল, কারণ অভিযুক্ত সুপারভাইজার অনিন্দিতা ভদ্রের স্বামী অয়নই ছিলেন কমিটির প্রধান। এই অবস্থায় কমিটি কতটা স্বচ্ছভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। অনমিত্র রায়ের অভিযোগ, তাঁকে বারবার হেনস্থা করা হয়েছিল, যা নিয়ে তিনি সুপারভাইজার অনিন্দিতা ভদ্র ও অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিতে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগে কোনও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে তিনি হতাশ হন। এই পরিস্থিতি নিয়ে বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা অয়নের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
উল্লেখ্য, অনমিত্র রায় উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা এবং অটিজ়মে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি আইসারের কল্যাণী ক্যাম্পাসে গবেষণা করছিলেন। গত সপ্তাহে আইসারের ল্যাবরেটরির ভিতরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন অনমিত্র। পরদিন কল্যাণীর এইমস হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে একটি সুইসাইড নোটও লিখেছিলেন তিনি, যেখানে নিজের শারীরিক সমস্যার কথাও উল্লেখ ছিল। পরবর্তী সময়ে অনমিত্রের পরিবারের তরফে নদিয়া জেলার হরিণঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আইসার কর্তৃপক্ষও এই ঘটনার ওপর পৃথক তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে। এই ঘটনার কারণে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি গবেষকদের কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।