শহরের উড়ালপুলগুলোর নিচে আগুন জ্বালানোর ফলে ক্ষতি হচ্ছে কংক্রিটের পরিকাঠামোর। তা নিয়ে নতুন করে চিন্তায় পড়েছে কলকাতা পুরসভা। দাবি করা হচ্ছে, কলকাতার একাধিক উড়ালপুলের নীচে দীর্ঘদিন ধরে ভবঘুরে ও ফুটপাতবাসীরা অস্থায়ী বাসস্থান গড়ে তুলেছেন। সেখানে চলে রান্নাবান্না, কাঠ-কয়লার আগুনে দিনরাত ধোঁয়া ওঠে। আর তার ফলেই গরমে সেতুর স্ট্রাকচারে বড়সড় ক্ষতি হচ্ছে। শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন: ৩ বছর ধরে চেষ্টা করেও মেলেনি স্বাস্থ্য সাথী, মেয়রকে ফোন করতেই কাজ হল ২৪ ঘণ্টায়!
পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ বলছে, এই ধরনের তাপ বারবার সেতুর তলার স্টিল ও কংক্রিট স্তরে প্রভাব ফেলছে। যার ফলে পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখেই উড়ালপুলের নিচে বসতি গড়া নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন ফিরহাদ। তিনি জানিয়েছেন, উড়ালপুলের নিচে রান্নার জন্য বা অন্য কারণে আগুন সেতুর স্ট্রাকচারকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এটা রীতিমতো বিপজ্জনক। তাই আগুন জ্বালানো চলবে না। সেতুর নিচে কাউকে বসতেও দেওয়া হবে না।
মেয়রের দাবি, এই সমস্ত অস্থায়ী বাসিন্দাদের একাংশ প্রকৃত ভবঘুরে নন, বরং সুযোগ নিয়ে ব্যবসা করছে। কেউ টাকা নিয়ে অন্যদের বসতে দিচ্ছে। কেউ আবার নিজেরাই জায়গা দখল করে নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত। আর তাদের তৎপরতায় দিনে দিনে বাড়ছে উড়ালপুলের ক্ষতির আশঙ্কা।
উল্লেখ্য, শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভবঘুরে ও ফুটপাতবাসীদের সরিয়ে নাইট শেল্টারে নিয়ে যেতে গত মঙ্গলবার স্থানীয় থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়েছিল কলকাতা পুরসভা শহরের চারটি জায়গা মল্লিকবাজার, বালিগঞ্জ, পার্ক সার্কাস এবং গড়িয়াহাটে পুরসভা ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ভবঘুরেদের সরানোর চেষ্টা করেছে। তবে তাদের জিনিসপত্র তুলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলেও প্রায় কাউকেই নাইট শেল্টারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সমস্যা এখানেই থেমে নেই। একবার সরালেও তারা আবার ফিরে আসছে। তাই মেয়র জানিয়েছেন, শুধু উচ্ছেদে থেমে থাকলে চলবে না, পুলিশকে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে।
উল্লেখ্য, এই পরিস্থিতি নিয়ে পুর-কমিশনার কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে ফের চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, যেন কোথাও নতুন করে কেউ বাসা না বাঁধে, আগুন না জ্বালায় এবং সেতুর স্বাস্থ্য যাতে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করা হয়।