রাজ্যের স্কুলশিক্ষকদের বদলির জট কাটাতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্কুল শিক্ষা দফতর। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ও দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফার বা পারস্পরিক বদলির নিয়মে একাধিক বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। বদলির সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবার থেকে জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদকে দেওয়া হয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা। (আরও পড়ুন: ট্রেনে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাটার নিয়মে বড় বদল, কী জানাল রেল?)
আরও পড়ুন: প্রথমদিনেই ১০,০০০-র বেশি আবেদন, ‘পরীক্ষা দিতেই হবে’, SSC নিয়ে বার্তা ব্রাত্যের
২০১৬ সাল থেকে বহু শিক্ষক মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করে রেখেছিলেন। ২০২২ সালে এই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ফের চালু হলেও নানা জটিলতায় বহু আবেদন দীর্ঘদিন আটকে ছিল। এর প্রধান সমস্যা ছিল যদি একজন শিক্ষক পারস্পরিক বদলির জন্য কাউকে বেছে নেন এবং অপর দিকের শিক্ষক রাজি না হন বা পোর্টালে সাড়া না দেন, তাহলে আবেদনকারী শিক্ষক দীর্ঘদিন ‘লক’ অবস্থায় পড়ে থাকতেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, জেলা স্তরের ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর বা জেলা শিক্ষা পর্ষদ সেই ‘লক’ অবস্থা তুলে নিতে পারবে। এখন থেকে যদি কোনও শিক্ষক মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য কাউকে বেছে নিয়ে আবেদন করেন, কিন্তু বিপরীত দিক থেকে সাড়া না আসে, তাহলে তাঁর আবেদন ফের নতুনভাবে চালু করা যাবে। অর্থাৎ তিনি অন্য কাউকে বেছে নিয়ে আবার আবেদন করতে পারবেন। একইভাবে, দুই শিক্ষক যৌথভাবে পারস্পরিক বদলির জন্য আবেদন করেও যদি কোনও কারণে নির্দেশ না আসে, তাহলেও তাঁদের পুনরায় সুযোগ করে দেওয়া হবে। (আরও পড়ুন: মদের কারণেই বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়িতে পুড়েছিল নগদ টাকা! দাবি রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: মহাকাশে যেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে ভারতের শুভাংশুকে, ষষ্ঠবার কেন স্থগিত মিশন?
প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, বদলির সময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ থেকে পাওয়া কনফার্মেশন অর্ডার অবশ্যই আপলোড করতে হবে। এই নথি ছাড়া কোনও অনলাইন আবেদন গৃহীত হবে না। মাধ্যমিক স্তরে, যেসব শূন্যপদে আগে বদলির জন্য আটকে ছিল কিন্তু বাস্তবে বদলি হয়নি, সেই সব শূন্যপদ আবার আনলক করা হবে। এর ফলে অন্য শিক্ষকরাও সেই শূন্যপদে বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, যাঁরা ইতিমধ্যে সাধারণ বদলির জন্য আবেদন করেছেন, কিন্তু সুপারিশপত্র পাননি তাঁরা চাইলে তাঁদের আগের আবেদন বাতিল করে নতুন করে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘শিক্ষা দফতরে এ বিষয়ে অনেক বার আবেদন জানানো হয়েছিল। শেষপর্যন্ত তার অনেকটা সমাধান হল। পারস্পরিক বদলির প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত বাস্তবে কার্যকরী হয় তার জন্য শিক্ষা দফতর উদ্যোগ গ্রহণ করুক। এই প্রক্রিয়া চালু করার কথা ঘোষণা হলেও বাস্তবে তা এখনও কার্যকর হয়নি।’