দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বাস্তবায়িত হয়নি বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্প। প্রায় এক যুগ ধরে ঝুলে থাকা এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজে বর্তমান অগ্রগতি জানতে ফের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে সম্প্রতি শুনানির সময় উভয় পক্ষের তরফে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই আদালত চার সপ্তাহের মধ্যে ফের বিস্তারিত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন:মুম্বইয়ের বুলেট ট্রেনের প্রজেক্টে 'তেল চুরি' বাংলার যুবকদের, হাতে নাতে গ্রেফতার
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়েছে, ১৮ জুন পর্যন্ত মোট ৩৮৬.৪১৫৫ একর জমি অধিগ্রহণ হয়েছে, যার বড় অংশ রেলের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে জমি সংক্রান্ত কিছু বাধার কথা সরাসরি স্বীকার করেছে রাজ্য। তারা জানিয়েছে, প্রকল্পটি এখন দু’টি ধাপে ভাগ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে প্রথম পর্যায়ে অধিগ্রহণ করা হয়েছে ১৬৯.৮৯ একর জমি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২১৬.৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করে হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে। প্রকল্পের কাজ নিয়েও কিছু অগ্রগতির ইঙ্গিত মিলেছে। রাজ্যের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রকল্প এলাকায় মোট ৯টি সেতু তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে চারটি সেতুর কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। আরও চারটির নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে।
এই প্রকল্পের বিলম্ব নিয়ে ২০২১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাক্তন শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ মাহাতো। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আদালত দ্রুত রেল প্রকল্প সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়। মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণকুমার চক্রবর্তী আদালতকে জানিয়েছেন, ২০২৩ সালেই জমি অধিগ্রহণের অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল জেলা প্রশাসনের কাছে। কিন্তু বাস্তবে সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতায় জর্জরিত হয়েছে। হাইকোর্ট জানায়, চার সপ্তাহ পরে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সেইসময় কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারকে প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতির বিস্তারিত তথ্য পেশ করতে হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্পটির জন্য দীর্ঘদিন ধরেই অপেক্ষা করছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষ। প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুধু ওই জেলার নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন পরিবহণ বিশেষজ্ঞেরা।