পূর্ব পাকিস্তানে বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারকারী একটি নৌকা ডুবে চার শিশু-সহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রবিবার এ তথ্য জানিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে পরিস্থিতি।
গত এক সপ্তাহের টানা মৌসুমি বৃষ্টিতে পাক পাঞ্জাব প্রদেশের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া তিনটি প্রধান নদী ফুলে ফেঁপে উঠে। কৃষিভিত্তিক এই প্রদেশে পাকিস্তানের প্রায় ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বসবাস। শনিবার রাতে ঘটনার খবর জানিয়ে প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ডিরেক্টর জেনারেল ইরফান আলি কাথিয়া বলেন, ‘রেসকিউ ১১২২ নৌকাটি জলের নিচে থাকা একটি বস্তুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। দুর্ঘটনার পর ১০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও দুর্ভাগ্যবশত ৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।' এই বন্যায় নদীতীরবর্তী গ্রামীণ অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রবল বৃষ্টিতে শহরাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোরের বেশ কয়েকটি অংশ।
আরও পড়ুন-ভারতের দাবিতেই মান্যতা! কানাডায় ফুলেফেঁপে উঠছে খলিস্তানিরা, বিশেষ যোগ হামাস-হিজবুল্লাহর
দক্ষিণ এশিয়ার মৌসুমি বৃষ্টি কৃষকদের জন্য জরুরি হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই প্রাকৃতিক ঘটনা ক্রমেই অপ্রত্যাশিত ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। চলতি মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার পর থেকে জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে পাকিস্তানজুড়ে ৮৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।রবি, শেলেজ ও চেনাব নদীর জল উপচে ভয়াবহ বন্যা ডাকগা দিয়েছে পাক পাঞ্জাবে। প্লাবিত হয়েছে প্রদেশটির প্রায় ৪ হাজার ১০০টি গ্রাম। পাঞ্জাব প্রদেশের ত্রাণ কমিশনার নাবিল জাভেদ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে ৪২৩টি ত্রাণকেন্দ্র, ৫১২টি চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। পশুদের চিকিৎসার জন্যও সাড়ে চারশো কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই বন্যায় ১৫ লক্ষেরও বেশি গবাদিপশুকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-ভারতের দাবিতেই মান্যতা! কানাডায় ফুলেফেঁপে উঠছে খলিস্তানিরা, বিশেষ যোগ হামাস-হিজবুল্লাহর
নতুন গবেষণা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তন পাকিস্তানের আবহাওয়াকে টালমাটাল করে তুলছে। পাকিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছ অতিবৃষ্টি ও মেঘভাঙা বৃষ্টি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশ। পাকিস্তানের কৃষি উৎপাদনের কেন্দ্র এবং সে দেশের প্রধান গম উৎপাদনকারী অঞ্চল এটি।