দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে সহপাঠীকে ছুরি দিয়ে এক ছাত্রের কুপিয়ে খুনের পরই মেট্রোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এই আবহে কলকাতার মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে। বর্তমানে দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রোয় নিরাপত্তার জন্য মাত্র ১০০ জন আরপিএফ জওয়ান মোতায়েন রয়েছেন। এবার সেই সংখ্যা বাড়তে চলেছে।
কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১০০ জন আরপিএফ জওয়ানের জায়গায় এবার দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রোর নিরাপত্তার দায়িত্বে আরও ৮০০ জন জওয়ান মোতায়েন করা হবে।এর ফলে যাত্রী সুরক্ষা আরও জোরদার হবে এবং ভিড়ের সময় যাত্রীরা আরও নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারবেন। মেট্রোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট করতে আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের চলাচল নিয়মিতভাবে নজরদারি করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে। প্রতিটি স্টেশনে প্রবেশের সময় যাত্রীদের ফ্রিস্কিং করা হচ্ছে এবং ব্যাগেজ স্ক্যানার ও দরজা ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর-এর মাধ্যমে লাগেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাত্রীদের সন্দেহজনক আচরণ বা চলাফেরা নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, যাত্রীদের সহযোগিতা ছাড়া এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর হবে না। তাই কর্তৃপক্ষ বিশেষভাবে আহ্বান জানিয়েছে, যাত্রীরা যেন কোন অবস্থাতেই নিরাপত্তা প্রটোকল ভঙ্গ না করেন এবং ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর বা ব্যাগেজ স্ক্যানার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা না করেন। নিয়ম মেনে চললে যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা আরও সহজ হবে।
আরও পড়ুন-'যদি কোনও অবৈধ পদ্ধতি...,' বিহার 'SIR' নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি সুপ্রিম কোর্টের, কোন বার্তা ECকে?
দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে গত ১২ সেপ্টেম্বর ঘটে যাওয়া ঘটনাটি প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি ছিল একেবারেই ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং স্কুল পড়ুয়া কয়েকজনের সঙ্গে জড়িত।প্রতিদিন বহু অফিসগামী কর্মী ও ছাত্রছাত্রী মেট্রো ব্যবহার করেন, তাই কিছু সীমিত পরিসরে যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম বহনের অনুমতি দেওয়া হয়। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে যে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। যাত্রীদের বলা হয়েছে, কলকাতা মেট্রো সম্পূর্ণ নিরাপদ, আরামদায়ক ও খরচ সাশ্রয়ী ভ্রমণের সুযোগ প্রদান করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। নতুন করে যে ৮০০ জন নিরাপত্তা কর্মী যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা কার্যকর হলে নিরাপত্তা আরও দৃঢ় হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্তে মেট্রো যাত্রীদের মধ্যে আস্থা বাড়বে। একই সঙ্গে নিয়মিত নজরদারি, প্রযুক্তিগত সুরক্ষা এবং যাত্রীদের সহযোগিতার মাধ্যমে শহরের এই প্রধান গণপরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য করে তোলা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন-'যদি কোনও অবৈধ পদ্ধতি...,' বিহার 'SIR' নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি সুপ্রিম কোর্টের, কোন বার্তা ECকে?
স্বাভাবিকভাবে মেট্রোতে যাত্রী ভিড় যে পুজোর ক'টাদিনে আরও বাড়বে তা বলাইবাহুল্য। পুজোর সময় যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে এবং পরিষেবাও সচল রাখতে যেমন পুজোর ক'দিন টাইম টেবিলে রদবদল আনা হচ্ছে, তেমনই যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মেট্রো স্টেশনে নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে।