রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট হবে কি না তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কংগ্রেস হাইকমান্ড। তবে অধীর-দীপারা তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিপক্ষেই মত প্রকাশ করেছেন। তাঁরা হাইকমান্ডকে জানিয়েছেন, সিপিএমের সঙ্গে জোটই দলের পক্ষে মঙ্গলকর। তাতে রাজ্যের দলের বিকাশের সম্ভবনা রয়েছে। তাদের ‘দল ভাঙিয়ে’ যে ভাবে ফুলে ফেঁপে উঠেছে তৃণমূল, তাতে আবার জোট করলে দলের রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকবে।
তবে সূত্র বলছে, হাইকমান্ড চাইছে রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গেই জোট হোক প্রদেশ কংগ্রেসের, তাতে আসন জেতার সম্ভাবনা বাড়বে। ফলে দিল্লিতে দর কষাকষির সুযোগও থাকবে। তবে এই নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি হাইকমান্ড। প্রশ্ন হল, রাজ্যে যদি তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হয় তবে সিপিএম কী করবে?
সিপিএম প্রথম থেকেই রাজ্যে বিজেপি-তৃণমূলের সঙ্গে সমদুরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্যে যদি তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে কংগ্রেস, তবে হাতে সঙ্গে জোট খারিজ করে দেবে সিপিএম?
(পড়তে পারেন। তৃণমূলের সঙ্গে বাংলায় জোট, হাইকমান্ডকে কোন শর্ত দিল প্রদেশ কংগ্রেস)
এ প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সভাপতি মহম্মদ সেলিম বলেছেন, 'বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী যে শক্তি আছে তাদের সঙ্গে আমরা আসন সমঝোতা করব। বাকি প্রশ্ন বিধানভবনে জিজ্ঞেস করুন।' অর্থাৎ তাঁদের অবস্থান নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই এখন কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের উপর সবটা নির্ভর করেছে।
রাজ্য তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে কতটা মন-প্রাণ দিয়ে মাঠে নামবে কংগ্রেস তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁশায়া রয়েছে। কারণ, প্রদেশ সভাপতির দাবি, তৃণমূল নয় সিপিএমের সঙ্গেই জোট থাকুক। সেক্ষেত্রে হাইকমান্ড যদি ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে জোট করার নির্দেশ দেয় তবে তা কংগ্রেস কর্মীদের কতটা উজ্জীবিত করবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেখানেই নিচু থেকে উঁচুস্তরে লোকসভা ভোটের কার্যপদ্ধতি কি হবে তা ঠিক করা হবে। এর মধ্যে যদি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সম্ভাবনা খারিজ হয়ে যায়, তবে সিপিএম ‘একলা চলো’ পদ্ধতিতেই লড়বে।
যদিও তৃণমূল নেত্রী সিপিএম-কংগ্রেস দুপক্ষের সঙ্গে জোটের জন্য দলের দরজা খোলা রেখেছেন। তাঁর কাছে বিজেপি হল প্রধান শত্রু। তবে কংগ্রেস সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে আসন সংখ্যাও জানিয়ে দিয়েছেন। বর্ষশেষে ছবিটা পরিষ্কার হবে আশা করছে রাজনৈতির মহল।