সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক বাজি কারখানায় একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটেছে। তারপর থেকেই আপাতত সব ধরনের বাজি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও বাজি ক্লাস্টার তৈরির কথাও ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। তবে আপাতত সেই প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। তবে এরই মধ্যে জেলায় জেলায় সবুজ বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছেন বাজি ব্যবসায়ীদেরই একাংশ। এই নিয়ে বাজি ব্যবসায়ীদের মধ্যেই বিবাদ তৈরি হয়েছে। এই প্রশিক্ষণকে কেন্দ্র করে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ পালটা অভিযোগ তুলেছেন বাজি ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: বেআইনি বাজি কারখানা রুখতে 'ক্লাস্টার' করবে রাজ্য, সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে কমিটি
জানা গিয়েছে, হুগলিতে সবুজ বাজি তৈরির একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আয়োজন করা হয়েছিল গত সোম এবং মঙ্গলবার। সেখানে বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট–এর(নিরি) প্রধান বিজ্ঞানী সাধনা রাইলু। তা নিয়েই হুগলির চণ্ডীতলা থানায় অভিযোগ জানিয়েছে আতশবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায়। তিনি অভিযোগ করেছেন, ওই শিবিরের কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। সরকারি কোনও দফতরকেও জানানো হয়নি। তাছাড়া নিরি-র কোনও প্রতিনিধি সেখানে যাননি। টাকা তোলার জন্যই এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল। এর ফলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হানা দেয় পুলিশ। সেখানে সকলের পরিচয় পত্র খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সাধনা বাবুকেও জিজ্ঞেস করে পুলিশ। পালটা এই ঘটনায় বাবলার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না। তিনি বলেন, ‘সমস্ত জায়গাতেই এর জন্য অনুমতি নেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন দফতরের পাশপাশি পুলিশের কাছেও অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে বাজি সংগঠনগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব বেঁধেছে।
যদিও বাজি ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই বিবাদ এই প্রথম নয়। তবে সম্প্রতি বাজি বিস্ফোরণের ঘটনার পরে সেই দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, স্বল্প বিনিয়োগে মোটা টাকার এই ব্যবসায় সকলেই নিজের হাতে রাশ রাখতে চাইছেন। আবার অনেকের মতে মহেশতলা, বজবজের মতো এলাকায় কয়েক বছর ধরেই বাবলার প্রতাপ কমে আসছিল। সেখানে সুখদেব নস্কর নামে এক বাজি প্রস্তুতকারী জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি শুভঙ্করের ঘনিষ্ঠ। এছাড়াও নিরির আধিকারিকদেরও পছন্দের লোক শুভঙ্কর। তবে সরকার বাজি ক্লাস্টার ঘোষণার পর থেকেই বাবলা আবার উঠে দাঁড়াতে চাইছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে বাবলা বলেন, ‘ওখানে ভুয়ো প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। বাজি বিক্রেতারা সবুজ বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে কী করবেন? আসলে টাকা তোলার জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল।’ পালটা শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘আদালতে বাবলার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করব। সাধনা রাইলুর মতো বিজ্ঞানীকে তিনি অবমাননা করেছেন।’ আগামী দিনে সবুজ অন্যান্য জায়গাতেও সবুজ বাজি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান।