আজ, সোমবার শিবপুজো। হাজার হাজার ভক্ত ঘটে জল ভরতে দামোদরের ঘাটে ভিড় জমাবেন। এই চিরাচরিত দৃশ্যকে কেন্দ্র করেই রীতিমতো সতর্ক প্রশাসন। গত কয়েকদিন ধরে দামোদরে জলস্তর বৃদ্ধি এবং মাইথন-পাঞ্চেত থেকে আসা প্রবল জলস্রোতের কারণে দুর্গাপুর পুরসভা ও সেচ দফতরের পক্ষ থেকে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দামোদরের উপর তৈরি হচ্ছে দুটি নতুন সেতু, পূর্ব বর্ধমানে যোগাযোগ হবে আরও সহজ
বীরভানপুরে বিশেষ স্নানঘাট তৈরি করা হয়েছে ভক্তদের সুবিধার্থে। ঘাটটি লোহার নেট দিয়ে ঘিরে নিরাপদ করা হয়েছে, যাতে কেউ আচমকা স্রোতে না পড়ে যান। অন্যদিকে, বড়জোড়ার দিকের অস্থায়ী স্নানঘাট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নদীর জলস্তর এতটাই বেড়েছে যে ওই অংশের ঘাট জলের তলায় চলে গিয়েছে। ঝুঁকি না নিয়ে প্রশাসন ঘাটে ঢোকার রাস্তায় লোহার ব্যারিকেড বসিয়ে দিয়েছে এবং সেখানে ‘স্টপ’ বোর্ড টাঙানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের।
উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে রবিবার সকাল ৭টায় জল ছাড়া হয়েছিল প্রায় ৬৫ হাজার কিউসেক হারে। দুপুরের পর সেই হার বেড়ে হয় ৭০ হাজার কিউসেকের কাছাকাছি। এই অবস্থায় যেমন মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল আসছে, তেমনই টানা বৃষ্টিতে স্থানীয় নদীনালাও ফুলেফেঁপে উঠেছে।
ডিভিসি সূত্রে খবর, শনিবার পর্যন্ত মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে একসঙ্গে ৬০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুরোধে রবিবার তা সামান্য কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাঞ্চেত থেকে ৩০ হাজার ও মাইথন থেকে ২৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মাইথনে জলস্তর রয়েছে ৪৭৮.১৫ ফুট, বিপদসীমার মাত্র নিচে, আর পাঞ্চেতে রয়েছে ৪০৮ ফুট উচ্চতায়। দু’জায়গাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে। ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে। দামোদর হেড ওয়ার্কস-এর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার বলেন, জলস্তর বাড়ছে, কারণ শুধু ডিভিসির জল নয়, আশপাশের পাহাড়ি নদীগুলোর স্রোতও এসে পড়ছে দামোদরে। তাই আগাম সতর্কতা নিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। দুর্গাপুরের বড়জোড়া ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ সিট জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই বড়জোড়ার অস্থায়ী ঘাটে নামতে দেওয়া হবে না। ভক্তদের দুর্গাপুর শহরের মূল ঘাটগুলির দিকেই যেতে বলা হয়েছে।