পুলিশি ভূমিকা নিয়ে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। মন্তেশ্বর থানার আইসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সরাসরি থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গভীর রাতে সাধারণ মানুষের বাড়ির দরজায় গিয়ে পুলিশি তল্লাশি চালানোর পদ্ধতি নিয়েও প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের এই ক্যাবিনেট মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ওয়াকফ সংশোধনী বিরোধী প্রতিবাদে পুলিশের লাঠিচার্জ কেন? প্রশ্ন মমতারই মন্ত্রীর
শনিবার মেমারির সাতগেছিয়া এলাকায় নিজের বিধায়ক কার্যালয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিদ্দিকুল্লা। ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি চলাকালীন থানার আইসির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনেন তিনি। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে পুলিশ অফিসার নিজে গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি দরজায় লাঠি ঠুকে প্রশ্ন করছেন, স্বামী কোথায়, বাবা কোথায়। ঘুমন্ত অবস্থায় গায়ে বস্ত্র না থাকা অবস্থায় মহিলাদের দরজা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। মন্ত্রীর ভাষায়, এটা পুলিশি নয়, এটা গুণ্ডামি। এর থেকে গরু-ছাগল চরানো অনেক সম্মানজনক কাজ। রাজ্যের শাসকদলের মন্ত্রীর মুখে এমন কটাক্ষ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও জেলার পুলিশ প্রশাসন এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। মন্ত্রীর অভিযোগ, থানার আইসি একতরফা হয়ে গিয়েছেন এবং গোষ্ঠীস্বার্থে কাজ করছেন। নাম না করেই তিনি নিশানা করেন মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহমদ হোসেন শেখকেও, যার সঙ্গে মন্ত্রীর সম্পর্ক গত কয়েক মাস ধরে তলানিতে।
উল্লেখ্য, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানান ৩ জুলাই তাঁর নিজের বিধানসভা এলাকায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, এমনকি মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেও পুলিশ পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে থানা ঘেরাও এখন সময়ের অপেক্ষা বলেই হুঁশিয়ারি তাঁর। মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শের সঙ্গে এই ধরনের পুলিশি আচরণ যায় না। কাটমানি, মারামারি, দালালি এসব তিনি সহ্য করেন না। এই ঘটনার সঙ্গে আগের বিতর্কও জড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই বোলপুর থানার আইসিকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়ান বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এবার সেই সুরেই যেন হাঁটলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা। বিজেপি নেতৃত্বও এই সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ। দলের নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, বাংলার পুলিশমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তাঁরই এক মন্ত্রী যদি পুলিশকে দোষারোপ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষের ভরসা কোথায় থাকবে? তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এখনই মুখ খোলেনি। রাজ্য নেতৃত্ব যা বলার বলবে বলে জানিয়ে জেলা স্তরের নেতারা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।