সমুদ্র তীরবর্তী জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র দিঘায় বুধবার রাতেই ঘটল চাঞ্চল্যকর ঘটনা। কর বাকি রাখার অভিযোগে একাধিক হোটেলে তালা ঝুলিয়ে দিল দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ স্থানীয় পুলিশ। হঠাৎ মাঝরাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা বহু পর্যটককে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়তে হয়। আতিথেয়তার শহর দিঘায় এমন ঘটনায় স্বভাবতই ক্ষোভে ফুঁসছেন দর্শনার্থীরা।
আরও পড়ুন: জগন্নাথ মন্দিরের জন্য দিঘায় ভিড় বেড়েছে, পর্যটকদের সুবিধায় ট্যুরিস্ট গাইড বুক
পর্ষদের নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিটি হোটেলকে পর্যটক-পিছু ১০ টাকা করে কর জমা দিতে হয়। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি হোটেল সেই নিয়ম মানছিল না। একাধিকবার নোটিস দেওয়ার পরও টাকা জমা না হওয়ায় এদিন রাতে পদক্ষেপে নামে প্রশাসন। পুলিশের উপস্থিতিতে পর্ষদের আধিকারিকরা হানা দেন ওল্ড দিঘার কয়েকটি হোটেলে। এর মধ্যে শ্যাম সুন্দর আবাস, নয়নতারা হোটেল-সহ একাধিক নামী হোটেল রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে মাঝরাতেই পর্যটকদের লাগেজ নিয়ে হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়। অনেককে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কেউ আবার রাত কাটান অন্য হোটেল খুঁজে নিয়ে।
পর্ষদের এক আধিকারিক জানান, বারবার সতর্ক করার পরও হোটেল কর্তৃপক্ষ কর জমা দেয়নি। পর্যটক পিছু কর সরকারের আয়, সেটাই তাঁরা এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তাই বাধ্য হয়েই হোটেল সিল করে দেওয়া হয়েছে। তবে হোটেল মালিকরা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব। হোটেল ব্যবসায়ী দেবব্রত দাস বলেন, হয়তো সময়মতো কর জমা হয়নি, কিন্তু এজন্য রাতের বেলা পর্যটকদের রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। কিছু আধিকারিকের কারণে তাঁদের ওপর উপর অকারণে চাপ তৈরি হচ্ছে। দিঘা শংকরপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যদি কর বাকি থাকে, সকালবেলায় হোটেল বন্ধ করা যেত। রাতে পর্যটকদের এমন সমস্যায় ফেলা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ঘটনায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ পর্যটকরা। বহু মানুষ জানান, হঠাৎ মাঝরাতে হোটেল ছাড়তে বাধ্য হওয়ায় তাঁদের ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভেস্তে গিয়েছে। কারও ছোট সন্তান, কারও সঙ্গে বৃদ্ধ বাবা-মা সব মিলিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়তে হয় পর্যটকদের।