বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল ঘিরে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। নিজের প্রেমিকাকেই সেখানে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল বাঁকুড়ার ছাতনা এলাকার এক যুবতীর। আলাপ দ্রুতই গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। কয়েক মাস ধরে একাধিকবার দেখা-সাক্ষাৎও হয়েছে তাঁদের। কিন্তু ৬ জুলাই যুবতীকে হস্টেলে ডেকে পাঠানোর পর ঘটনার মোড় ঘোরে। তাঁকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তরুণী ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কসবায় ফের গণধর্ষণ! অভিনয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মডেলকে যৌন নির্যাতন
অভিযোগ, গত ৬ জুলাই দুপুরে হস্টেলে গিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি ও নানা আশ্বাস দিয়ে তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু এরপর থেকেই তিনি দূরত্ব তৈরি করতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত বিয়ে করতে অস্বীকার করেন এবং সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে বাঁকুড়ার ছাতনা থানায় মামলা রুজু হয়। পরে বিষয়টি বর্ধমান থানা এলাকায় হওয়ায় মামলা স্থানান্তরিত হয়। আদালতের নির্দেশে বর্ধমান থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি। উল্টে গ্রেফতারি এড়াতে জেলা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন তিনি।
শুনানির পর জেলা জজ সুজয় সেনগুপ্ত শর্তসাপেক্ষে অভিযুক্তকে আগাম জামিন দেন। আদালত জানিয়েছে, চূড়ান্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে দু’দিন তাঁকে তদন্তকারী আধিকারিকের কাছে হাজিরা দিতে হবে। পাশাপাশি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে একটি হলফনামা জমা দিতে হবে যেখানে উল্লেখ থাকবে যে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত থাকবেন না। পাশাপাশি ১০ দিনের মধ্যে সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্তের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, অভিযোগকারী সাবালিকা এবং ঘটনার পর বেশ কিছুদিন পেরিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাই ধর্ষণের ধারা প্রযোজ্য নয় বলেই তাঁদের বক্তব্য। এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। কীভাবে একজন বহিরাগতকে নিয়ে হস্টেলের ঘরে প্রবেশ করতে পারলেন ওই জুনিয়র ডাক্তার। গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ডাক্তারি পড়ুয়াদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।