মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত পর্যটনের শহর লালবাগ। এখানে বহু পর্যটক আসেন প্রাচীন ইতিহাসকে জানতে। সেখানে এখানের হোটেল ব্যবসার আড়ালেই রমরমিয়ে চলছে দেহব্যবসা বলে অভিযোগ উঠেছে। এখানের রেজিস্ট্রি অফিস মোড় থেকে হাজারদুয়ারি, মুর্শিদাবাদ জংশন স্টেশন থেকে বিডিও অফিস এবং মোতিঝিল এলাকার কিছু হোটেলে দেহ ব্যবসা চলছে অনেকদিন ধরে বলে অভিযোগ। রমরমিয়ে চলা এই মধুচক্রের পর্দা ফাঁস করল পুলিশ। মুর্শিদাবাদ জংশন স্টেশন সংলগ্ন এক হোটেলে পুলিশ অভিযান চালালো। আর মধুচক্র চালানোর অভিযোগে হোটেল মালিক, ম্যানেজার এবং দু’জন খদ্দেরকে গ্রেফতার করা হয়। ৬ জন যুবতীকেও উদ্ধার করা হয়।
এখানের একাধিক হোটেলে মধুচক্র চলে বলে অভিযোগ। দিনরাত এই হোটেলগুলিতে খদ্দেরদের যাতায়াত লক্ষ্য করা যায়। সন্ধ্যা গড়াতেই হোটেলগুলিতে ভিড় শুরু হয়ে যায়। এই পর্যটন শহরে এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। পুলিশে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আর তার ভিত্তিতে এই অভিযান। এই বিষয়ে লালবাগ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আকুলকর রাকেশ মহাদেব বলেন, ‘নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট হোটেলে অভিযান চালানো হয়। ৬জন মহিলাকে উদ্ধার করার পাশাপাশি চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি হোটেলে অভিযান চালানো হবে।’
আরও পড়ুন: সেনার পোশাক পরে প্রকাশ্যে নৃত্য থেকে অঙ্গভঙ্গি দুই যুবতীর, সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের
পুলিশ সূত্রে খবর, এই লালবাগ শহরে সব মিলিয়ে প্রায় ১০০টি হোটেল আছে। সব কটি যে খুব ভাল চলে তা নয়। তবে চলে। এখানে যেসব হোটেল ভাল চলছিল না সেগুলিই বিকল্প পথ হিসাবে মধুচক্রকে আঁকড়ে ধরেছে। মুর্শিদাবাদ জংশন স্টেশন থেকে হাজারদুয়ারির আগে যে রাস্তা তার দু’পাশে অনেক হোটেলেই দেহব্যবসা চলে। সব হোটেলে এখন থেকে নজর রাখা হচ্ছে। এখানের পর্যটন বাঁচিয়ে রাখতে গেলে কড়া পদক্ষেপ করতেই হবে। লালবাগ শহর কংগ্রেস সভাপতি অর্ণব রায় বলেন, ‘হোটেলের আড়ালে মধুচক্র বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নবাবের শহরে এমন অসামাজিক কাজ বাড়ছে। পুলিশকে সাধুবাদ জানাই।’
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনীতিবিদরাও উষ্মাপ্রকাশ করেছেন। মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, ‘কিছু হোটেলে মধুচক্র চলছে। কারও প্রশ্রয়ে চলছে।’ সিপিএম নেতা মনু শেখের কথায়, ‘এই এলাকায় বহু হোটেল গড়ে উঠেছে। যেখানে পর্যটকরা কেউ যান না। ওই হোটেলগুলি কেন গড়ে উঠেছে? সেটা বোঝাই যাচ্ছে।’ এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুর্শিদাবাদ–জিয়াগঞ্জ ব্লক সভাপতি মহম্মদ গোলাম আকবরী বললেন, ‘হোটেলে কুকর্ম হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’ আর মুর্শিদাবাদ হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক স্বপন দাস বলছেন, ‘এমন কাজের জেরে সমস্ত হোটেল ব্যবসায়ীদের বদনাম হচ্ছে।’