বাংলা ও বাঙালির জাতিসত্ত্বার ইস্যুতেই ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন লড়তে চলেছে তৃণমূল। সোমবার তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাঙালি প্রীতিকে কার্যত বাংলাদেশিদের বাঁচানোর চেষ্টা বলে দাবি করলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। জগন্নাথ ধাম কালচালার সেন্টারের উদ্বোধনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রথম দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘একটা বাংলাদেশিকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁচলের তলায় লুকিয়ে থাকতে দেব না।’
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ‘জয় শ্রী রাম, জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা, সব বলব। কিন্তু জয় বাংলা বলব না। আপনি বাংলাদেশ থেকে স্লোগান নিয়ে আসবেন। বাংলাদেশ থেকে ভোটার নিয়ে আসবেন। লোক না হলে হিরো হিরোইন নিয়ে এসে প্রচার করবেন। পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর চক্রান্ত করছেন।’
এর পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছেন? কিছু তাঁবেদারকে পুরস্কার দিয়েছেন। বাংলা ভাষাকে সম্মান দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আপনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন, কেন করেননি? আপনি বাঙালির কথা ভাবেন না। নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছেন পঞ্জাবি বউ। নিজের বাড়িতেও অবাঙালি। আরও মজার ব্যাপার, ওনার লোকেরাও বাংলা বোঝে না, তাই অর্ধেক ভাষণ হিন্দিতে দিয়েছেন। বাংলার তো বারোটা বাজিয়েছেন আপনি শুদ্ধ বাংলা বলতে পারেন না। হিন্দির আর হাত পা ভাঙবেন না। খড়গপুরের লোকেরা হেসে মরে যাচ্ছে ভাষণ শুনে। আপনার এই দ্বিচারিতা বন্ধ করুন। এসব বলে বাঙালিকে বোকা বানাবেন না।’
মমতার বিরুদ্ধে ভুয়ো বাঙালি প্রীতির অভিযোগ তুলে দিলীপবাবু বলেন, ‘উনি একটা নতুন খেলা শুরু করেছেন। বাঙালি আর বাংলাদেশি এই দুটোকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুলিয়ে দিচ্ছেন। বাঙালি বলে বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে পারবেন না। মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় তাদের ভোটার কার্ড আধার কার্ড বানিয়েছেন। তাদের ভোটার করে দিয়েছেন। তারা সারা দেশে ছড়িয়ে গিয়েছে। সিমি, আল কায়েদা, জামাতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা এখন সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম করছে। আজকে রাজ্যে রাজ্যে বুলডোজার চলছে কার ওপরে। এই বাংলাদেশি দখল করে রেখেছে রেলের জায়গা, সরকারি জায়গা। উত্তর প্রদেশ, অসম, দিল্লি, হরিয়ানায় সেই সব জমি খালি করা হচ্ছে। তারা স্বীকার করছে, তারা ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এসেছিল। কে ডেকেছে তোদের?'
দিলীপবাবুর দাবি, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালিদের জন্য করছেন না, বাংলাদেশিদের জন্য করছেন। শুনে রাখুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা বাংলাদেশিকেও আঁচলের তলায় লুকিয়ে থাকতে দেব না। গলা ধাক্কা দিয়ে বার করব। আর যদি কোনও তৃণমূলের নেতা - মন্ত্রী বাংলাদেশিকে বাঁচানোর চেষ্টা করে তাহলে বাংলাদেশির বাড়িতে বুলডোজার চলবে। সেই নেতার বাড়িতেও বুলডোজার চলবে। ২টোকে বান্ডিল করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেব।’