ফের ধসের কবলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। শুক্রবার মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’দফায় ধস নামে এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। ফলে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং এবং সিকিমের সড়ক যোগাযোগ। বিকল্প পথের অবস্থাও একই, ধসের কবলে পড়েছে লাভা-গোরুবাথান রোডের পাপড়খেতি অংশ, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: সিকিম–শিলিগুড়ির লাইফলাইনে এখন ব্যাহত যান চলাচল, আবার কী হল সেখানে?
শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ধস নামে কালিম্পংয়ের বিরিকদারা এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রাস্তা দিয়ে যান চলাচল করছিল। আচমকা পাহাড় থেকে বোল্ডার, কাদা, পাথর আর গাছ নেমে এসে বন্ধ করে দেয় গোটা রাস্তাটি। অল্পের জন্য রক্ষা পায় চলমান একটি গাড়ি ও একটি লরি। মনে করা হচ্ছে, উপরের অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণেই এই ধসের সৃষ্টি হয়েছে।
ধস নামার পর থেকেই দু’দিক থেকে দাঁড়িয়ে পড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও প্রশাসনের দল। আর্থমুভারের সাহায্যে ধস সরানোর চেষ্টা চললেও, পাহাড় থেকে অবিরাম পাথর পড়তে থাকায় সেই কাজও থমকে যায় বারবার। পরিস্থিতি সামাল দিতে সিকিম, কালিম্পং ও শিলিগুড়ির মধ্যে ঘুরপথে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
কালিম্পংয়ের জেলা শাসক বালাসুব্রহ্মণ্যম টি জানান, বিরিকদারায় ধস পরিষ্কারের কাজ চলছে। তবে উপরের দিক থেকে যেভাবে পাথর পড়ে চলেছে, তাতে কাজে বাধা আসছে। কালিম্পংয়ের পুলিশ সুপার শ্রীহরি পাণ্ডেও জানিয়েছেন, ওই এলাকায় সতর্ক নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই সন্ধ্যা নাগাদ ধস নামে লাভা-গোরুবাথান রোডের পাপড়খেতি অংশে। সিকিম ও কালিম্পংয়ের সঙ্গে শিলিগুড়ির সংযোগ রক্ষা করার বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই রুট। ফলে ধসের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়ে। গোরুবাথানের স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই রাস্তাটি জিআরইএফ-এর আওতায়। ধস সরানোর জন্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কাজ শুরু করলেও বৃষ্টির কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টি থামলেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, তিন দিন আগেই ধস নেমেছিল দার্জিলিংয়ের দিকে যাওয়ার ১১০ নম্বর জাতীয় সড়কের তিনধরিয়া এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেখানে প্রায় ১০-১২ মিটার রাস্তা ধসে পড়েছে খাদের দিকে। যান চলাচল এখনও বন্ধ না হলেও ওই অংশ অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। প্রবল বৃষ্টি হলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনধরিয়া এলাকায় দ্রুত রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু হবে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে।