এক সিনিয়র ছাত্রের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ‘অপরাধে’ কলেজ ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে চরম হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠল। কলেজের তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, কান্দির রাজা বীরেন্দ্রচন্দ্র ল’কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে কলেজ কক্ষে আটকে রেখে চলে মারধর, শারীরিক নিগ্রহ। এমনকি তাঁকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে মাঠে ফেলে পেটানোর মতো অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেমঘটিত কারণ, জমি বিবাদের জেরেই খুন মালদার তৃণমূল নেতা, গ্রেফতার ৪ জন
শুক্রবার এই ঘটনার বিরুদ্ধে কান্দি থানায় ছ’জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা ছাত্রী। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন কলেজের পাঁচ জন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও এক ছাত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পলাতক, তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর অভিযোগ, গত ৮ জুলাই কলেজে গেলে তাঁকে ও তাঁর বান্ধবীকে একটি ক্যাফেতে দেখা করতে ডাকেন এক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সেই প্রস্তাব তিনি সঙ্গে সঙ্গেই প্রত্যাখ্যান করলে পাল্টা হুমকি দেওয়া হয় ‘দেখে নেওয়া হবে’। এরপর কলেজের এক রুমে তাঁকে ও বান্ধবীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর এক বহিরাগতদের ডেকে এনে ছাত্রীটির উপর চড়াও হয় ‘দাদা’রা। নির্যাতিতার বক্তব্য, প্রথমে ধাক্কা দেওয়া হয় তাঁকে। তারপর অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। এছাড়াও, ছাত্রীর মুখে নখের আঁচড় কেটে দেয় অভিযুক্তরা। পরে তাঁকে মাঠের দিকে টেনে নিয়ে গিয়ে বুকে, পেটে লাথি মারে।
ঘটনার কথা কলেজের অশিক্ষক কর্মী ও কিছু সহপাঠী জানার পর তাঁরা গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। আহত অবস্থায় তাঁকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে, পাল্টা অভিযোগ এনেছে অভিযুক্ত তৃতীয় বর্ষের ছাত্রও। তার দাবি, ওই ছাত্রী তার বাবা-মাকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন। বিষয়টি সে অধ্যক্ষের কাছেও লিখিতভাবে জানিয়েছে। এমনকী সে নিজেই পোশাক খুলে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল তাকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচিস্মিতা নাগ বলেন, ঘটনাটি কলেজ চত্বরে ঘটেনি। তবে পুলিশকে সমস্তরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। অধ্যক্ষ ছুটিতে আছেন। তিনি ফিরলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ঘটনায় ছাত্রছাত্রীদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে।