স্ত্রীর আবদার মেটাতে একটি স্মার্টফোন কিনে দিয়েছিলেন স্বামী। আর সেই স্মার্ট ফোনই বদলে দিল জীবন। ইনস্টাগ্রামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয়, পর প্রেম। আর শেষ পর্যন্ত যুবককে পালিয়ে বিয়ে করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হলেন পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার গোপালচক গ্রামের এক গৃহবধূ। গয়না, নগদ টাকা, দামি মোবাইল সব হারিয়ে ফিরে এলেন স্বামীর ঘরে। (আরও পড়ুন: বুধে শনির দশা, স্থগিত শুভাংশুর মহাকাশ যাত্রা, কী কারণে ঘটল এমনটা?)
আরও পড়ুন: স্বামীকে ছেড়ে পরকিয়া,সেখানে ধোঁকা খেয়েও হাল ছাড়েননি, এবার পেলেন সাচ্চা প্রেমিক
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিরিশের ওই গৃহবধূর স্বামী রাজস্থানে একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। তাঁদের দশ বছরের ছেলে ও পাঁচ বছরের মেয়ে রয়েছে। শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে গ্রামেই থাকতেন গৃহবধূ। কিছুদিন আগে স্মার্টফোন কেনার বায়না ধরেন তিনি। স্বামী সাধ্যমতো তা কিনেও দেন। মহিলা সেই ফোনেই খুলেছিলেন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট। ইনস্টাগ্রাম মারফত পরিচয় হয় ঘাটাল থানার মান্দারিয়ার এক ২৩ বছরের যুবকের সঙ্গে। ধীরে ধীরে কথাবার্তা থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। পরে যুবক জানান, তিনি বিয়ে করতে চান। স্বামী ও সন্তানদের ছেড়ে নতুন জীবন শুরু করতেও রাজি হয়ে যান গৃহবধূ। (আরও পড়ুন: বাজেটে সামগ্রিক ব্যয় ৭% কমিয়েছে পাকিস্তান, তবে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ল ২০%)
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের মান বাঁচাতে গিয়ে বিদেশি টিভিতে দেশের পোল খুললেন পাক সেনেটর
তারপর স্বামীর সংসার ছেড়ে পালানোর প্রস্তুতি শুরু করে দেন। প্রায় ৬০ গ্রাম সোনার ও ১০০ গ্রাম রুপোর গয়না, সঙ্গে নগদ কয়েক হাজার টাকা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই মহিলা বেরিয়ে পড়েন প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে।প্রথম সাক্ষাৎ হয় বাগনানে। সেখান থেকে দু’জনে মেয়েকে নিয়ে রওনা দেন দিঘার উদ্দেশ্যে। দিঘায় গিয়ে একটি লজে ঘর ভাড়া নেন। প্রথম রাত একসঙ্গে কাটানোর পর প্রেমিক বিয়ের আশ্বাস দিয়ে গৃহবধূর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন।
পরদিন সকালে জগন্নাথ মন্দিরে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন ওই গৃহবধূ। মেয়েকে নিয়ে বাথরুমে গিয়েছিলেন স্নান করতে। সেই সময়ই ঘটে প্রতারণা। বাথরুমের বাইরে থেকে দরজা ও ঘরের দরজা তালাবন্ধ করে গয়না, মোবাইল, নগদ টাকা সব কিছু নিয়ে চম্পট দেয় প্রেমিক।
বাথরুম থেকে বেরোতে না পেরে মেয়েকে কোলে নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে চিৎকার শুরু করেন গৃহবধূ। তখন লজ কর্মীরা এসে দরজা খুলে তাঁদের উদ্ধার করেন। তারপর সোজা দিঘা থানায় যান তিনি। পুলিশের সহায়তা ও লজ মালিকের আর্থিক সাহায্যে গৃহবধূ ও তাঁর মেয়ে ফিরে আসেন কোলাঘাটে। ঘটনার পরে মঙ্গলবার ঘাটাল থানায় লিখিত অভিযোগ জানান তিনি ও তাঁর স্বামী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘার লজে দেওয়া আধার কার্ড অনুযায়ী অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি ঘাটালের মান্দারিয়ায়। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গৃহবধূ বলেন, নতুন ফোন পেয়েই ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট করেন। যুবকের কথায় বিশ্বাস করে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এখন তিনি বুঝতে পারছেন অনেক বড় ভুল করেছিলেন। তবে তারপরেও স্ত্রীর পাশে দাঁড়ান স্বামী। মহিলা জানান, তাঁর স্বামী কখনও তাঁর ওপর অত্যাচার করেননি। গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।