হরিয়ানা সরকারের চিঠি ঘিরে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারগুলির মধ্যে। সেই আতঙ্কের ছবি সামনে এল উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে। সেখানে বুধবার সকাল থেকে শংসাপত্র পাওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় সহায়তা শিবিরের বাইরে। পরিজনদের নিরাপত্তা ও পরিচয়ের সুরক্ষার জন্য হাতে শংসাপত্র নিয়ে থানার দ্বারস্থ হতে শুরু করেন বহু মানুষ। (আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে 'বাংলাদেশি' ধরা নিয়ে আপত্তি তৃণমূলের, এরাজ্যেই গ্রেফতার অবৈধবাসী)
আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে বাঙালি নিগ্রহ হলেই বিজেপি নেতাদের বাড়ির সামনে ধর্না, নির্দেশ তৃণমূলের
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হরিয়ানা প্রশাসনের তরফে একটি চিঠি এসেছে রাজ্য সরকারের কাছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে সেই রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের তথ্য ও পুলিশি শংসাপত্র চাওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, এই চিঠি থেকেই স্পষ্ট, পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নজরদারি বাড়ছে এবং এতে বাংলাভাষী মানুষের উপর দমন নীতি চালানো হচ্ছে। তারই প্রতিক্রিয়ায় ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন উদ্যোগ নেন জরুরি সহায়তা শিবির খোলার। (আরও পড়ুন: উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের 'রূপ বদল', ভারী বৃষ্টিতে ভাসবে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গ)
আরও পড়ুন: বড় বদল কেন্দ্রের, রেশন কার্ড হোল্ডাররা এই কাজ না করলে নিষ্ক্রিয় হবে কার্ড
এই শিবিরে বুধবার একদিনেই হাজারেরও বেশি মানুষ হাজির হন। প্রত্যেকেই তাদের হরিয়ানায় কর্মরত আত্মীয়ের জন্য শংসাপত্র তুলতে এসেছেন। মোশারফ হোসেন নিজে তাঁদের সঙ্গে থানায় যান, যাতে দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে প্রয়োজনীয় নথিপত্র মিলিয়ে পুলিশ শংসাপত্র ইস্যু করা যায়। বিধায়কের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই এই শিবির চালু করা হয়েছে। এটি আগামী কয়েকদিন চলবে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, হরিয়ানার কিছু এলাকায় বাংলার শ্রমিকদের পরিচয় ঘিরে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ফলে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ইটাহারের বহু শ্রমিক গুরুগ্রামের চক্করপুর এলাকায় কাজ করেন। সেই এলাকাতেই এই ধরনের ‘নজরদারি’ শুরু হয়েছে বলে খবর। অনেকে বলছেন, রাজ্য সরকারের তালিকায় নাম থাকলেও স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশ বা প্রশাসনের কাছে পরিচয় নিশ্চিত করার মতো কাগজ না থাকায় নানা হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে অনেকেই আগেভাগে শংসাপত্র সংগ্রহ করছেন ভবিষ্যতের জন্য।
শুধু ইটাহার নয়, রাজ্যের বিভিন্ন অংশেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারগুলো এখন উদ্বেগে। কারণ, গত কয়েক মাস ধরে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর হামলা ও আটকের অভিযোগ একাধিকবার সামনে এসেছে। এর বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনকি ২১ জুলাইয়ের সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন আরও একটি ‘ভাষা আন্দোলন’-এর বার্তা।