পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই সবচেয়ে বড় চর্চার বিষয় হল ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর 'অত্যাচার'। তৃণমলের অভিযোগ, বাংলাভাষী হলেই তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। এরই মাঝে বিজেপি দাবি করছে, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিভাষী কাউকেই দেশছাড়া করা হয়নি। অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদেরই চিহ্নিত করেই আটক করা হচ্ছে। এই সব বিষয়ে রাজনৈতিক তরজার মাঝেই এবর দক্ষিণবঙ্গের সীমান্ত লাগোয়া নদিয়া জেলায় ধরা পড়ল অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। দীর্ঘদিন ধরে এই বাংলাদেশি থাকছিল ভারতেই। এই বাংলাদেশির কাছে আবার ভারতীয় ভুয়ো পরিচয়পত্রও ছিল। (আরও পড়ুন: উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের 'রূপ বদল', ভারী বৃষ্টিতে ভাসবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ)
আরও পড়ুন: বড় বদল কেন্দ্রের, রেশন কার্ড হোল্ডাররা এই কাজ না করলে নিষ্ক্রিয় হবে কার্ড
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৩ জুলাই নদিয়া থেকে রাসেল ইসলাম এক যুবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই যুবক বাংলাদেশি বলে জানা গিয়েছে। সে দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় ভুয়ো পরিচয়পত্র নিয়ে বসবাস করছিল এপারে। পেশায় এই রাসেল রাজমিস্ত্রী। বাংলাদেশের পঞ্চগড় এলাকার বাসিন্দা এই রাসেল। বেশ কয়েক বছর আগেই এই রাসেল নদিয়ার চাপড়া সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল বলে জানা গিয়েছে। দালালের মাধ্যমে এপারে লুকিয়ে ছিল রাসেল। পরে দালালের মাধ্যমেই ভুয়ো নথি ও তথ্য দিয়ে ভারতের পরিচয়পত্র বানিয়ে নেয় বাংলাদেশি রাসেল। সেই পরিচয়পত্র দেখিয়েই এতবছর ধরে ভারতে বসবাস এবং উপার্জন করছিল এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। (আরও পড়ুন: পদত্যাগের আগে জগদীপ ধনখড়কে ফোন করেছিলেন ২ মন্ত্রী, কী বলেছিলেন তাঁরা?)
আরও পড়ুন: প্রযুক্তি খাতে ভারতে বেকারত্ব বাড়াতে চাইছেন ট্রাম্প? নয়া বয়ান US প্রেসিডেন্টের
এদিকে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে রাসেল দাবি করেছে, সে শীঘ্রই বাংলাদেশে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়ায় সে ভয়ে ভারত ছাড়ার কথা ভাবছিল। জানা যায়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শিকড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল সালাম মণ্ডল দালাল হয়ে রাসেলকে সীমান্ত পার করিয়ে দিতে যাচ্ছিল। দালাল আবদুল সালাম মণ্ডলকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, অনুপ্রবেশের চেষ্টার কথা গোপন সূত্রে জানতে পেরেছিল পুলিশ। এই আবহে সীমান্ত এলাকায় গিয়ে রাসেল এবং দালাল সালামকে ধরে পুলিশ।
এর আগে সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সমিরুল ইসলাম বিজেপিকে তোপ দেগে দাবি করছেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের নাকি বাংলা বলার অভিযোগে বাংলদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই আবহে এক পরিবারের কথা উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টও করেছিলেন সমিরুল। তবে বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি দাবি করেন, সমিরুল যে পরিযায়ীদের কথা বলছেন, তাঁরা আসলেই বাংলাদেশি। এই সবের মাঝেই ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা আন্দোলনের ঘোষণা করেন। এবার এই পশ্চিমবঙ্গেই বাংলাদেশি অবৈধবাসী ধরা পড়ল ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র সমেত।