বর্তমানে দেশে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ঘটনা বাড়ছে। এর জন্য বিভিন্ন পন্থা বেছে নিচ্ছে প্রতারকরা। এবার পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার রেফারেন্স টেনে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর নামে বড়সড় প্রতারণার অভিযোগ উঠল! ভয় দেখিয়ে এক ব্যবসায়ীর থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠল প্রতারক দলের বিরুদ্ধে। তবে জলপাইগুড়ি সাইবার পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার হয়েছে সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন: ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ ভারতে প্রথম রায়, ৯ জনের যাবজ্জীবন সাজা কল্যাণীর আদালতের
জানা যায়, সেনপাড়ার বাসিন্দা ঝন্টু বসুর মোবাইলে একদিন আচমকাই আসে একটি ভিডিয়ো কল। ওপারে থাকা ব্যক্তি নিজেকে ‘মহারাষ্ট্র পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে জানায়, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় তাঁর সিম কার্ড ব্যবহার হয়েছে! দাবি করা হয়, এই অপরাধে তিনি এখন নজরদারিতে, যে কোনও মুহূর্তে তাঁর ওপর হামলা বা গ্রেফতার হতে পারে। ভয় ধরিয়ে বলা হয়, এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে হলে দিতে হবে ১৫ লক্ষ টাকা। বলা হয়, তাঁকে বাড়ির বাইরে পা না রাখতে এবং প্রতি দু’ঘণ্টায় জানাতে হবে যে তিনি ‘সুরক্ষিত’। চরম মানসিক চাপে পড়ে ওই ব্যবসায়ী পুরো টাকাটাই একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর প্রতারকরা আরও টাকার জন্য চাপ দেয়।
শেষমেশ প্রতারণার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ঝন্টুবাবু সোজা পৌঁছন জলপাইগুড়ি সাইবার থানায়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, পাঠানো অর্থ রাজস্থানের একটি অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে এবং প্রতারণার মূল হোতারা সম্ভবত কম্বোডিয়া থেকে এই জালিয়াতি চালাচ্ছিল। অভিযোগ দায়েরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জলপাইগুড়ি সাইবার সেল ১১.৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে তা ফিরে দেয় ভুক্তভোগীকে। পুলিশ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের সঙ্গে এই ঘটনার যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমন ধরনের ঘটনায় সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছে পুলিশ। বলা হচ্ছে, সন্দেহজনক কোনও ফোন এলে সঙ্গে সঙ্গে সাইবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।