তিন দশক আগে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে পা রেখেছিলেন। তখন থেকেই পরিচয় গোপন করে ছিলেন। নিজের দেশ ছেড়ে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমার বাগদা এলাকায় পাকাপাকি বসবাস শুরু করেন ওই ব্যক্তি। অবশেষে ব্যক্তির আসল পরিচয় সামনে আসতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের ঝিনাইদল গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর নাম রেজাউল মণ্ডল।
আরও পড়ুন: জেরক্স সেন্টারের আড়ালে ভুয়ো নথি তৈরির কারবার! মিনাখাঁয় গ্রেফতার ২
অভিযোগ, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার পর স্থানীয় এক তরুণীকে বিয়ে করেন রেজাউল মণ্ডল। বিয়ের পর স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে সংসার করতে থাকেন। এতদিনেও তাঁর প্রকৃত পরিচয় জানা যায়নি বলে দাবি স্ত্রীর। এমনকি রেজাউল নিজের শাশুড়িকে ‘মা’ হিসেবে দেখিয়ে তৈরি করেন ভারতীয় পরিচয়পত্র! ভোটার তালিকাতেও তাঁর নাম উঠে যায় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি রেজাউলের ছেলে ফিরোজ একটি মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান। সেই ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্ত করতে গিয়েই উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য। ফিরোজ এবং তাঁর বাবা রেজাউল, দু’জনেই বাংলাদেশি নাগরিক। এই অভিযোগ সামনে আসতেই স্থানীয় বিডিও দফতরে বিষয়টি জানানো হয় এবং বাগদা থানার পুলিশ রেজাউলের পরিবারের খোঁজে নামে। তদন্তে জানা যায়, রেজাউল বহু বছর আগে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসেছিলেন। বনগাঁর বাগি গ্রামে শুরু করেন নতুন জীবন। স্ত্রীর অভিযোগ, দীর্ঘ সংসার জীবনে কখনও রেজাউলের নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ হয়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, রেজাউল এখন বাংলাদেশেই ফিরে গিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, সে দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর তিনি ফিরে গিয়েছেন নিজের গ্রামে।
এদিকে, রেজাউলের অনুপস্থিতিতে পুলিশ তাঁর স্ত্রীকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে মদত দেওয়া, ভুয়ো নথি তৈরিতে সহায়তা করা এবং দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে বেআইনি ভাবে থাকতে দেওয়ার। শনিবার তাঁকে বনগাঁ আদালতে তোলা হয়। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।