আবারও ভুয়ো নথি তৈরি চক্রের পর্দা ফাঁস! আর ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ। দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহের তালিকায় থাকা একটি জেরক্স সেন্টারে বৃহস্পতিবার সকালে হানা দেয় পুলিশ। হানার পরই একে একে উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য। আধার কার্ড তৈরির আড়ালে চলছিল ভুয়ো নথিপত্র বানানোর চক্র। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ওই জেরক্স সেন্টারের দুই কর্মী। তাঁদের নাম বাকিবুল্লাহ ও মাতিন।
আরও পড়ুন: ভারতে অনুপ্রবেশ, জাল নথি তৈরির চক্রে জড়িত বাংলাদেশি যুবককে ৬ বছরের জেল
পুলিশ সূত্রে খবর, মিনাখাঁর একটি বাজার এলাকায় চলত এই জেরক্স সেন্টারটি। বাইরে থেকে দেখতে সাধারণ দোকান হলেও ভিতরে নাকি চলত তথ্য জালিয়াতির এক সুগভীর কারবার। এলাকার বহু বাসিন্দা সেখানে বিভিন্ন সরকারি নথির ফটোকপি কিংবা সংশোধনের কাজ করাতেন। সেই সুযোগেই কিছু অসাধু কর্মী ভুয়ো আধার, জন্ম শংসাপত্র, এমনকি ভোটার কার্ড তৈরির চক্র চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ওই দোকানে অচেনা লোকজনের আনাগোনা বাড়তে থাকে। বিষয়টি পুলিশের নজরে আনেন এলাকার কিছু বাসিন্দা। সেই সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবার সকালে আচমকা অভিযান চালায় পুলিশ। প্রথমে জেরা, পরে প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে বাকিবুল্লাহ ও মাতিনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। দোকানটি আপাতত সিল করে দিয়েছে প্রশাসন।
এই ঘটনায় বসিরহাট জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, জেরক্স সেন্টারটির ভিতর থেকে বেশ কিছু সন্দেহজনক নথিপত্র ও আধার সংশোধনের কাগজ উদ্ধার হয়েছে। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির দাবি, এই ধরনের কারবার শাসকদলের প্রশ্রয়েই বাড়ছে। জাল আধার ও ভোটার কার্ড তৈরি করে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের পরিচয়পত্র পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যজুড়ে অলিগলিতে এমন অসংখ্য সেন্টার গজিয়ে উঠেছে। প্রতিবাদে সরব হয়েছে তৃণমূলও। স্থানীয় নেতা সুরেশ মণ্ডল সাফ জানিয়েছেন, তৃণমূল কোনও বেআইনি কাজকে সমর্থন করে না। প্রশাসন তার কাজ করছে। দল প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ করবে না।