দলেরই কর্মীর হাতে হেনস্তার শিকার হলেন তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলর। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানকার কাউন্সিলর মধুরীতা গোস্বামী মুখোপাধ্যায়কে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মারধরের পাশাপাশি খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। দলের ট্রেড ইউনিয়নের এক কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনায় খড়দহে প্রকাশ্যে এল শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ঘটনার জেরে এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। (আরও পড়ুন: কসবা ধর্ষণে অভিযুক্ত মনোজিতের 'অনুপ্রেরণা' গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই!)
আরও পড়ুন: 'TMC নেতার বাবাকে কাজের জায়গা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর', গ্রেফতার বিজেপি নেতা
কাউন্সিলর মধুরীতা গোস্বামী মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, দলীয় কর্মী সমীর বোস তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। মারধর করেন এবং ফোন কেড়ে নেন। শুধু তাই নয়, তাঁর প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ কাউন্সিলরের। এই ঘটনার পর মধুরীতা খড়দহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্তকে প্রথমে গ্রেফতার করলেও পরে ছেড়ে দেয়। এরপর থেকেই তিনি আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। কাউন্সিলরের কথায়, ’আমি নিরাপদ বোধ করছি না। ভাবতেই পারছি না, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের এলাকায় এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে! বিষয়টি আমি দলীয় নেতৃত্বকে জানাব।’ এই ঘটনা ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁদের বক্তব্য, যদি একজন কাউন্সিলরই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তাহলে সাধারণ মানুষের কী ভরসা থাকবে? (আরও পড়ুন: দিল্লি গিয়েও মমতা বন্দনায় দিলীপ, 'দলত্যাগ' নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি)
আরও পড়ুন: বেজায় চটেছেন মহুয়া, এবার 'শ্বশুরবাড়ি' বয়কটের হুঁশিয়ারি মহুয়ার
তবে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি পুরপ্রধান নিলু সরকার। তিনি বলেন, কাউন্সিলরের উচিত অভিযোগটি দলীয় নেতৃত্ব বা প্রয়োজনে তাঁর কাছে জানানো। তবে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিনের সংগঠক। আগে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা উচিত। অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী সমীর বোস সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, তিনি কাউন্সিলরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তাই তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। কাউন্সিলর একজন তোলাবাজ।
এই ঘটনার রাজনৈতিক প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে। সামনে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই তৃণমূলের অন্দরেই এই ধরনের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং এই পরিস্থিতিকে কটাক্ষ করে বলেন, খড়দহে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন ওপেন সিক্রেট। তোলাবাজিকে ঘিরে বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে বহুদিন। এখন সেই দ্বন্দ্বই নিচের স্তরেও নেমে এসেছে। কাউন্সিলরের ঘটনা তারই অংশ। তৃণমূল নেতৃত্ব যদিও বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মুখ খোলেনি। তবে স্থানীয় পর্যায়ের এই সংঘাত দলের ভাবমূর্তির উপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে এখনই জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে খড়দহের রাজনৈতিক মহলে।