অতি ভারী বৃষ্টির জেরে জলে ভাসছে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম। জলমগ্ন মহানগরে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের ছবিটা সামনে আসছে, ঠিক একইভাবে সমস্যায় পড়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানার আবাসিকরাও। জল থৈথৈ চিড়িয়াখানায় সুযোগ পাওয়া মাত্রই নিজের জন্য নির্ধারিত ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ল কুমির। দিনভর চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণে জলে ঘুরে বেড়াতে থাকল তারা। আর খাঁচা থেকে কুমির বেড়িয়ে পড়ায় হুলস্থুল কাণ্ড পড়ে যায় চিড়িয়াখানায়। জমা জলে কুমির ধরতে জাল নিয়ে নামতে হয় কিপারদের। হিংস্র জলজপ্রাণীকে ঘরে ফেরাতে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে তাঁদের।
আরও পড়ুন-মাস্টারপ্ল্যানের অংশ অরুণাচল! চিনের অভিসন্ধি নিয়ে ভারতকে সতর্কবার্তা তিব্বতি নেতার
বুধবার আলিপুর চিড়িয়াখানার সার্ধশতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান। চিড়িয়াখানায় একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। হাজির থাকবেন বনমন্ত্রী বীরবাহ হাঁসদা। এছাড়া আরও অনেকে আসছেন। তার আগে মঙ্গলবার কুমির নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন চিড়িয়াখানার কিপাররা। আলিপুর চিড়িয়াখানায় বন্যপ্রাণীদের বাস। ১৭ থেকে ১৯টির মতো কুমির সেখানে রয়েছে। সূত্রের খবর, অতি প্রবল বৃষ্টিতে চিড়িয়াখানায় জল জমে যায়। একাধিক আবাসিকের খাঁচায়ও জল ঢুকে গিয়েছে। কুমিরের খাঁচা জলমগ্ন হয়ে যায়। তাদের খাঁচার যে নালা রয়েছে তাতে জল বেড়ে যাওয়ায় তারা নালা দিয়ে বেরিয়ে আসে। চিড়িয়াখানায় প্রাঙ্গণে কুমিররা ঘুরে বেড়াতে থাকে। তড়িঘড়ি কর্মীরা জাল দিয়ে একে একে সবাইকে ধরে পুনরায় খাঁচায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কারোর কোনও ক্ষতি হয়নি। কর্মীদের তৎপরতায় কুমিরগুলি চিড়িয়াখানার বাইরে যেতে পারেনি। মঙ্গলবার চিড়িয়াখানা খোলা থাকে। তবে বৃষ্টির জেরে দর্শকরা আর চিড়িয়াখানামুখী হয়নি। তা না হলে হয়তো তাঁদের খাঁচার ভিতরে থেকে দেখতে হতো বাইরে থাকা কুমিরকে। ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে।
চিড়িয়াখানার নালার সঙ্গে আদি গঙ্গার যোগ রয়েছে। ফলে কুমিরদের শহরে ঢুকে পড়ায় আশঙ্কা থেকে যায়। ফলে দ্রুত জল নামিয়ে কুমিরবন্দি করতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষককে। তবে কর্মীদের তৎপরতায় তাদের নিরাপদে নিজেদের ঘরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।আলিপুর চিড়িয়াখানার এক কর্মী জানান, জল বাড়লেও কুমিরদের চিড়িয়াখানার বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। চিড়িয়াখানার সঙ্গে আদি গঙ্গার যে সংযোগ মুখ রয়েছে সেখানে জাল দেওয়া রয়েছে। ফলে কুমির বেরোলেও সেই জালে আটকে পড়বে। হরিণ, গণ্ডার, জলহস্তীদের খাঁচাতেও জল ঢুকে যায়। পাম্প চালিয়ে জল নামানো হয়।