ডুয়ার্সের চা বলয়ের পরিচিত মুখ আনি চিক বরাইক এবার বিজেপি ছেড়ে এবার কি তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন? দীর্ঘদিন ধরে দলে গুরুত্ব না পাওয়ার ক্ষোভ জমছিল তাঁর মনে। শেষমেশ জেলা কমিটিতে স্থান না পেয়ে বৃহস্পতিবার তিনি প্রকাশ্যে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেন। এরফলে চা বলয়ে অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে নতুন জেলা কমিটি বিজেপির, অগ্রাধিকার পুরনোদের
আনি চিক বরাইক ছিলেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক এবং বর্তমানে মেটেলি ইনডং পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী। আদিবাসী ও চা বাগান এলাকায় সমাজসেবামূলক কাজের জন্যই তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। সেই জনপ্রিয়তা দেখেই প্রায় ন’বছর আগে তাঁকে দলে টেনেছিল বিজেপি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জেলা রাজনীতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় তিনি কার্যত উপেক্ষিত হচ্ছিলেন। নিজের ক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়ায় উগরে দিয়ে আনি লিখেছেন, বিজেপিতে যারা পরিশ্রম করে দলের জন্য কাজ করেন, তাঁদের গুরুত্ব নেই। এখানে নেতার কাছের লোক হওয়াটাই মূল যোগ্যতা। মুখ দেখে কমিটি তৈরি হয়। অভিযোগ, দলের জেলা কমিটিতে এমন অনেককে রাখা হয়েছে, যাঁদের কর্মী সমর্থক জোগাড় করার ক্ষমতাও নেই। অথচ তিনি রোদ-বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করে সারা বছর মাঠে থেকেও কোনও পদ পেলেন না। তাই দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। যদিও তিনি
তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন কি না সে বিষয়ে কিছু জানাননি। তবে তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, এই ধরনের নেতৃত্বের কারণে জলপাইগুড়ি জেলায় বিজেপি আগামী বিধানসভা ভোটে চরম ভরাডুবির মুখে পড়বে। তাঁর এই পদত্যাগে কার্যত ফাটল ধরা শুরু করেছে জেলা বিজেপির অন্দরে। যুব মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি বিবেক ছেত্রীও ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, যাঁরা ময়দানে নেমে কাজ করছেন, তাঁদের কোনও দাম নেই। কয়েকজন নেতা দলে বসে সব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি প্রাক্তন জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদকেও নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি, যদিও তিনি প্রকাশ্যে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি শ্যামল রায় অবশ্য পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আনি একজন ভালো কর্মী ছিলেন। তাঁকে জেলা কমিটিতে রাখা হয়নি মানেই তাঁর গুরুত্ব কম নয়। বড় দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে।