শুভব্রত মুখার্জি:- রবিবারই এআইএফএফ-এর প্রধান আইনি উপদেষ্টা নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যকে টারমিনেট করে দিয়েছে এআইএফএফ। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) রবিবার তার প্রধান আইনি উপদেষ্টা নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। যখন তিনি সংস্থার সভাপতি কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে গুরুতর ‘দুর্নীতির অভিযোগ’ করেছেন তারপরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কল্যাণ চৌবে তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছিলেন। শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা একটি চিঠিতে নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন যে চৌবে অস্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং দরপত্রের অগ্রাধিকারমূলক বরাদ্দের মাধ্যমে ‘দুর্নীতির পথ’ তৈরি করেছেন। কল্যাণ চৌবে বলেছিলেন যে তিনি আইনিভাবে এর জবাব দেবেন।
অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন অর্থাৎ এআইএফএফের সভাপতি তথা প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে এবার উঠল বিস্ফোরক অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে আনা হল দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ। আর অভিযোগ আনলেন এআইএফএফে তাঁর এক সতীর্থ। এআইএফএফের লিগ্যাল হেড অর্থাৎ মুখ্য আইনি উপদেষ্টা নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যের তরফে এই গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে কল্যান চৌবের বিরুদ্ধে। নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য একেবারে চিঠি লিখে বিস্তারিতভাবে এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। তিনি তাঁর চিঠি পাঠিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। সেই চিঠিতে তিনি বিস্তারিতভাবে লিখেছেন কোন কোন দুর্নীতির সঙ্গে কল্যান চৌবে কীভাবে যুক্ত রয়েছেন।
আরও পড়ুন… Candidates Tournament 2024: প্রজ্ঞানন্দ সহ একাধিক দাবাড়ু পাননি কানাডার ভিসা! কোন পথে টুর্নামেন্টের ভবিষ্যত?
তাঁর চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন টেন্ডারের যে প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়াতে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এআইএফএফের সভাপতি। পাশাপাশি তাঁর পছন্দের ব্যক্তি বা সংস্থাকে অসদ, অস্বচ্ছ উপায়ে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ারও অভিযোগ তিনি তুলেছেন। এরপর আরও গুরুতর অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ ফেডারেশনের নিজস্ব টাকা সরিয়ে সেই টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন কল্যান চৌবে। বিষয়টি নিয়ে কল্যান চৌবেও মুখ খুলেছেন। তিনি সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। পরিকল্পনামাফিক তাঁর বিরুদ্ধে এই ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে বলে তাঁর দাবি। এইসবের বিরুদ্ধে তিনি যে আইনি সহায়তা নিয়ে লড়াই করবেন তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন… বিশ্ব ক্রিকেট চায় না ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর কখনও শক্তিশালী হয়ে উঠুক- ICC-র বিরুদ্ধে CWI CEO জনি গ্রেভের বড় অভিযোগ
নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য যে চিঠি লিখেছেন তা সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের হাতে এসে পৌঁছেছে। তাতে লেখা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট কোম্পানিকে আইলিগ, সন্তোষ ট্রফি এবং আইডব্লুএলের (মহিলা লিগ) সম্প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই কোম্পানির নাম তিনি লেখেননি। পাশাপাশি ফুটসলেরও সম্প্রচারের দায়িত্ব ওই কোম্পানিকেই দেওয়া হয়েছিল। এইসব চুক্তি ছিল কয়েক কোটি টাকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যের তরফে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ কল্যান চৌবের ব্যক্তিগত কাজে সফর, হোটেলে থাকা এইসবের পিছনে যে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে তা মেটানো হয়েছে এআইএফএফের তহবিল থেকেই। যার মধ্যে রয়েছে একাধিকবার কল্যান চৌবের বেঙ্গালুরু সফর। চিঠিতে লেখা হয়েছে বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণের জন্য টিকিটের পিছনে কমপক্ষে ৪০ লক্ষ টাকার মতন খরচ করা হয়েছে। উল্লেখ্য কল্যান চৌবে এআইএফএফের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যকে মুখ্য আইনি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন… কোহলি-গম্ভীরের ঝগড়া দেখেই বিরাটকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন! অবশেষে স্বীকার করলেন পাক ক্রিকেটার সলমন আঘা
এরপরেই নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যকে মুখ্য আইনি উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। AIFF ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এম সত্যনারায়ণ রবিবার তাঁকে সরিয়ে টারমিনেটের চিঠিতে লিখেছেন, ‘অবিলম্বে প্রধান আইনী উপদেষ্টা হিসাবে আপনার চুক্তি বাতিল করার হচ্ছে। AIFF-এর সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আপনাকে অবহিত করছি।’ তবে আরও এক মাসের বেতন দেবে বোর্ড। কারণ এটাই নিয়ম। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে অবাক হননি এআইএফএফ-এর প্রধান আইনি উপদেষ্টা নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।