এবারের আইপিএলে কলকাতার অন্যতম ফিনিশর হিরো রিঙ্কু সিং। তিনি প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই শেষের দিকে হাল ধরে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জেতানোর লড়াই করেন। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন আমদাবাদে। গুজরাট টাইটানসের বিরুদ্ধে যখন শেষ ওভারে ২৯ রান দরকার ছিল তখন পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা মেরে দলকে জেতান। আর এরপরই রিঙ্কু ফিনিশর হিরো হিসেবে পরিচিত হন।
কলকাতার এই অবিশ্বাস্য জয়ের পর রিঙ্কু খুবই আনন্দিত হন। হতাশাগ্রস্ত গুজরাটের ক্রিকেটারদের সামনে রিঙ্কুকে নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন নাইটরা। সেই জয়ের পর যখন তারা হোটেলে ফিরে যান তখন রিঙ্কু তাঁর প্রিয় বন্ধু এবং ঘরোয়া ক্রিকেটের রুমমেট ধ্রুব জুরেলকে ফোন করেন। ধ্রুব জুরেলের সঙ্গে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি আলাপচারিতায় এমন ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। ধ্রুব এই বছর রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে দুর্দান্ত খেলেন।
এই আলাপচারিতায় জুরেলের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি এই বছর আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের কাছ থেকে কি কি শিখেছেন? উত্তরে বলেন, 'এই মরশুমটা আমার আসাধারন কেটেছে। এই নিয়ে আমি দ্বিতীয়বার আইপিএল খেলছি। এখান থেকে অনেক কিছুই শিখছি। বাটলার, শিমরন হেটমেয়ার, সঞ্জু ভাই অশ্বিন, যুজবেন্দ্র চাহালদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করেছি এবং অনেক কিছুই শিখেছি তাদের থেকে। আমি আমার পারফরম্যান্স নিয়ে খুবই খুশি। তবে চেষ্টা করব পরের বার আরও ভালো খেলার।'
এছাড়াও জুরেলের কাছে জানতে চাওয়া হয় একজন কার্গিল যোদ্ধার ছেলে হয়ে ক্রিকেটকে কিভাবে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নিলেন তখন জুরেল বলেন, 'আমার পরিবার আমার ক্রিকেট খেলা নিয়ে কখনওই সমর্থন করেনি। আমার বাবা চেয়েছিল আমি সেনাবাহিনীতেই যোগদান করে দেশের সেবা করি। সেনাবাহিনীতে যোগদান করলে আমার ভবিষ্যৎও সুরক্ষিত হতো। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ক্রিকেট খেলতে। আর এতে আমার আত্মবিশ্বাসও ছিল যে আমি ভালো করেই খেলব। আমি যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি তখন বন্ধুদের সাথে একটি গ্রীষ্মকালীন শিবিরে যোগ দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে ফর্মে খেলা হিসাবে সাঁতারে টিক দিয়েছিলাম। পরে শিবিরে ভেতরে ঢুকে দেখি একদল ছেলে জার্সি পরে ক্রিকেট খেলছে। আর একজন ব্যাটার খুবই ভালো খেলছে। এটাই আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাই আমি সাঁতার ছেড়ে ক্রিকেট খেলতে যাই। এই ভাবেই আমার ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয় আমার।'
ধ্রুবর আইডল এমএস ধোনির সঙ্গে দেখা হওয়ার অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এবছর প্রথম যখন সিএসকের বিরুদ্ধে মাঠে নামি, তখন ধোনির কাছে আমার একটাই প্রশ্ন ছিল। তিনি কীভাবে ছয় বা সাতে নামেন এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। তখন ধোনি উত্তর দেয়, তুমি যদি ছয় বা সাতে নামো তাহলে জানো না পিচ কেমন হবে। কোন বল কোন দিক থেকে হবে বা বলের ধরণ কেমন হবে। তবে নিজেকে সেই জায়গা থেকে বের করে এনে বলকে চালিয়ে খেলতে হবে। তখন হয়তো কিছু সংখ্যক বল বাকি থাকবে তাই চেষ্টা করতে হবে প্রতি বলেই বড় রান করার।'
এবছরের আইপিএলে তিনি যে শটগুলি খেলেছেন সেই সম্পর্কে জানতে চাইলে জুরেল বলেন, 'এই শট খেলার জন্য আমাকে অনেক অনুশীলন করতে হয়েছে। আমার হিসাবে দুটি শট সেরা। সেগুলি হল রিভার্স সুইপ এবং ল্যাপ শট। তবে আইপিএল থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। যা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। আমি সেই সব শটগুলি বেশি করে খেলে যেতে চাই যা এখানে শিখেছি। আমাকে আরও উন্নতি করতে হবে। যার জন্য কঠোর পরিশ্রমও করছি।'
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।