'মানহানির মামলাকে অপরাধের তকমামুক্ত করার সময় এসে গিয়েছে।' ঔপনিবেশিক যুগের ফৌজদারি আইন নিয়ে এমনই বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা অমৃতা সিং একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম 'দ্য ওয়্যারে'র বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন। নিম্ন আদালত, দিল্লি হাইকোর্টের পর সেই মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে গড়িয়েছে।
সেই মামলার শুনানিতেই শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ বলেছে, মানহানির মামলাকে অপরাধের তকমামুক্ত করার সময় এসেছে। বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ বলেন, 'মনে হয়, এ সমস্ত কিছুকে অপরাধের তকমামুক্ত করার সময় এসে গিয়েছে। আর কত দিন এটাকে এ ভাবে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে?' অন্যদিকে, 'দ্য ওয়্যারে'র হয়ে আদালতে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনিও সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।
আরও পড়ুন-ট্রাম্প-মাস্কের পুনর্মিলন? ৩ মাস পর ‘চার্লির জন্য’ বিশেষ সমীকরণের ইঙ্গিত
'দুর্ভাগ্যজনক!' এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় কেন্দ্রের রিপোর্ট তলব SC-র
ঘটনার সূত্রপাত
২০১৬ সালে অনলাইন সংবাদমাধ্যম 'দ্য ওয়্যারে' প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষুব্ধ হন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা অমৃতা সিং। তাঁর অভিযোগ, ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, তাঁর নেতৃত্বে জেএনইউ-র এক দল শিক্ষক-শিক্ষিকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ২০০ পৃষ্ঠার একটি নথি তৈরি করেন। সেই নথিতে নানা আপত্তিকর মন্তব্য লেখা ছিল এবং পরে তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও পাঠানো হয়। এই রিপোর্টকে মানহানিকর বলে 'দ্য ওয়্যার' এবং ডেপুটি এডিটর অজয় আশীর্বাদ মহাপ্রস্থের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন অমৃতা সিং। প্রথমে ২০১৭ সালে দিল্লির একটি মেট্রোপলিটন আদালত দ্য ওয়্যারের সিদ্ধার্থ ভাটিয়া এবং অজয়কে তলব করে। এর বিরুদ্ধে ওই সংবাদমাধ্যম দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ নয়। তবে সেখানে তাদের আর্জি খারিজ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত মামলা পৌঁছয় সুপ্রিম কোর্টে। বস্তুত, ভারতের ন্যায় সংহিতায় এখনও মানহানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। অতীতে রাহুল গান্ধী ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো বিরোধী নেতারাও এই আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তবে, এবার সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ভবিষ্যতে নতুন দিশা দিতে পারে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন-খনি খুঁড়তেই চকচকে..., মধ্যপ্রদেশের পান্নায় মিলল হিরে! কপাল খুলল শ্রমজীবী রচনা গোলদারের!