বেশ কয়েক মাসের টানাপোড়েন ও দফায় দফায় আলোচনার পর অবশেষে বাণিজ্য যুদ্ধের আঁচ থেকে বাঁচতে পারল বিশ্ব বাণিজ্যের দুই প্রধান শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। রবিবার বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্কটল্যান্ডের পশ্চিমাংশে অবস্থিত ট্রাম্পের বিলাসবহুল গল্ফ রিসর্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। তারপরই এই ঘোষণা ট্রাম্পের।
আরও পড়ুন: ওবামার পর এবার কমলার পিছনে পড়লেন ট্রাম্প, বললেন - ‘হ্যারিসের বিচার হওয়া উচিত’
চুক্তি অনুযায়ী, ইউরোপ থেকে আমদানি হওয়া বেশিরভাগ পণ্যের উপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক বসাবে যুক্তরাষ্ট্র। এটি ট্রাম্পের পূর্বঘোষিত ৩০ শতাংশ শুল্ক হারের অর্ধেক হলেও ইউরোপের প্রত্যাশিত ‘জিরো-টু-জিরো’ শুল্ক চুক্তির তুলনায় অনেকটাই বেশি। ট্রাম্পের দাবি, এটি সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি। সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমি মনে করি, এটা এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি।’ তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করবে এবং ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি ও শত শত বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনবে। তিনি আরও বলেন, জাপানের সঙ্গে গত সপ্তাহে ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির পর এই চুক্তি ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় রচনা করবে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের রফতানিকারকদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যেভাবে অবিচার করা হয়েছে, তার প্রতিকার এর মধ্যেই রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন ট্রাম্পকে একজন ‘কঠোর আলোচক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘১৫ শতাংশ শুল্কটি সর্বব্যাপী প্রযোজ্য হয়েছে। এটা আমাদের পক্ষে পাওয়া সবচেয়ে ভালো সমাধান।’ তিনি বলেন, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে এমন একটি চুক্তি স্থিতিশীলতা আনবে। জানা যাচ্ছে, চুক্তিতে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় রাখা হয়েছে। যেমন- বিমান ও বিমানের যন্ত্রাংশ, নির্দিষ্ট রাসায়নিক, কিছু জেনেরিক ওষুধ, সেমিকন্ডাক্টর যন্ত্রপাতি, কৃষিপণ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ ও গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল। এছাড়া
স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০% শুল্ক আগের মতোই বহাল থাকছে। ভন ডার লিয়েন জানান, এই শুল্ক ব্যবস্থা ভবিষ্যতে কোটা পদ্ধতিতে রূপান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে এবং উভয় পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে।এদিকে, মদজাতীয় পণ্য বা স্পিরিটসের ওপর শুল্ক এখনও আলোচনার স্তরে রয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাণিজ্যিক বিমানের ওপর শুল্ক আপাতত শূন্য থাকবে, তবে একটি পর্যালোচনার পর যৌথভাবে তা চূড়ান্ত করা হবে।