মীরাটকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এবার পাঞ্জাবের লুধিয়ানায়।প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুন করে নীল ড্রামে ভরে রেখেছিল স্ত্রী মুসকান। এবার সেই রকমই নীল ড্রামের মধ্যে দড়ি দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হল এক পচাগলা দেহ। মৃতদেহটি প্ল্যাস্টিকে মোড়া ছিল। মনে করা হচ্ছে, খুব ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে ওই যুবককে।আর এই ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে লুধিয়ানায়। (আরও পড়ুন: নিজেকে 'নতুন বাংলাদেশের জনক' বানাতে গিয়ে শিষ্যদেরই ক্ষোভের মুখে ইউনুস)
আরও পড়ুন: অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করা পাক মেজরের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন মুনির, বললেন...
পুলিশ সূত্রে খবর, লুধিয়ানার শেরপুর এলাকায় একই রকম একটি নীল ড্রামের ভিতরে একটি পচাগলা মৃতদেহ পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে সাফাইকর্মীরা খালি জমিতে একটি পরিত্যক্ত ড্রাম পড়ে থাকতে দেখেন। সেখান থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। তখনই তাঁরা দেখতে পান মৃতদেহটি।স্থানীয়রা ওই ড্রাম দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ৬ নম্বর ডিভিশন পুলিশ।এরপরই ঘটনাস্থল থেকে ওই ড্রাম থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে তারা। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর তাঁদের মত, মৃত ব্যক্তি কোনও পরিযায়ী শ্রমিক হতে পারে।খবর স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) ইনস্পেক্টর কুলবন্ত কৌর জানিয়েছেন, দেহটি বছর চল্লিশের কোনও ব্যক্তির। তার গলা-পা দড়ি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখা ছিল। তারপর গোটা দেহ চাদর দিয়ে মুড়ে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে নীল ড্রামের ভিতরে ভরা ছিল। (আরও পড়ুন: কার্তিক মহারাজের নামে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের, কী দাবি অভিযোগকারীর?)
পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃতদেহে স্পষ্ট কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই, তবে দেহের অবস্থা এমন যে বিস্তারিত কিছু বলা এখনই সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে। এদিকে, তদন্তে উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ তথ্য। যে ড্রামে দেহটি রাখা হয়েছিল, সেটি একেবারে নতুন বলে মনে হয়েছে পুলিশের। ফলে সন্দেহ দানা বাঁধছে, খুনের আগে পরিকল্পনা করে ড্রামটি কেনা হয়েছিল।ইতিমধ্যেই লুধিয়ানার ৪২টি ড্রাম প্রস্তুতকারক সংস্থার তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। সেগুলির সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছে। এছাড়াও অপরাধস্থলের আশপাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। নজর দেওয়া হচ্ছে শহরের রাস্তাঘাট, রেল স্টেশন এবং বাসস্ট্যান্ডের নজরদারি ক্যামেরার দিকেও। পাশাপাশি, কিছু সন্দেহভাজন গাড়ির নম্বর চিহ্নিত করে তাদের গতিপথও ট্র্যাক করছে পুলিশ।
মৃতদেহটিতে ইতিমধ্যেই পচন শুরু হওয়ায় তদন্তকারীরা মনে করছেন, অন্তত দিন দু’য়েক আগে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। ওই ব্যক্তির চেহারা দেখে তদন্তকারীরা অনুমান করেছেন, ওই ব্যক্তি রাজ্যের বাইরের। তাঁর পরিচয় এখনও জানা যায়নি। পুলিশ আধিকারিক কুলবন্ত জানিয়েছেন, যে জায়গা থেকে যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তার আশপাশের এলাকায় অনেক পরিযায়ী শ্রমিক এবং ভিন্রাজ্যের মানুষ থাকেন। সেখান থেকে কোনও নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভারতকে এস৪০০-এর বাকি দুই স্কোয়াড্রন কবে দেবে রাশিয়া? এল বড় আপডেট
উল্লেখ্য, এই ঘটনা মীরাট হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে। মাত্র কয়েক মাস আগে মীরাটে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করে এই রকমই একটি নীল ড্রামে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে ঢুকিয়ে রেখেছিল মুসকান নামের এক তরুণী। বর্তমানে দুজনেই জেলবন্দি। মীরাটের ওই ভয়ঙ্কর ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল দেশে। এবার লুধিয়ানার এই ঘটনার নেপথ্যে কী, সেটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।