বাবার গুলিতে টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। ঘটনার পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। একদিকে মেয়ের টেনিস অ্যাকাডেমি চালানো ও আর্থিক স্বনির্ভরতা নিয়ে বাবার অস্বস্তি, অন্যদিকে সাম্প্রতিক এক মিউজিক ভিডিওতে তাঁর রোম্যান্টিক দৃশ্যে উপস্থিতি, পরিবারের উপর চাপ বাড়িয়ে তোলে। এমনই দাবি করছে গুরুগ্রাম পুলিশ।
২৫ বছর বয়সি জাতীয় স্তরের টেনিস খেলোয়াড় রাধিকাকে বৃহস্পতিবার সকালে গুলি করে খুন করেন তাঁর বাবা দীপক যাদব। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত দীপককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে খুন এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, রাধিকা দুই বছর আগে একটি চোট পাওয়ার পর শুরু করেন একটি টেনিস অ্যাকাডেমি। পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে বিভিন্ন রিল বানানো ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকাও ছিল তাঁর অভ্যাস। এই সমস্ত কিছুই ভাল চোখে দেখছিলেন না তাঁর বাবা।গুরুগ্রাম পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক সন্দীপ কুমার বলেন,‘সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পোস্টের কারণে রাধিকার বাড়িতে অশান্তি হয়।এরপরেই বাবা রেগে গিয়ে তাকে গুলি করে।ঘটনাস্থল থেকে খুনে ব্যবহৃত লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিভলভার উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুন-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’
আরও পড়ুন-'মহিলা অফিসারদের স্যার বলা যাবে না', হাসিনার নিয়ম পালটাচ্ছে ইউনুস!
এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি প্রকাশিত রাধিকার এক মিউজিক ভিডিও আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে। 'কারওয়ান' নামে ওই গানটি গেয়েছেন শিল্পী ইনআম।গত বছর রাধিকার ভিডিওটি প্রকাশিত হয়েছিল এলএলএফ রেকর্ডস-এর ব্যানারে, প্রযোজনা করেছেন জিশান আহমেদ।ভিডিওতে রাধিকাকে ইনআমের সঙ্গে একাধিক ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে দেখা যায়। এই ঘটনায় তাঁর বাবা ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। রাধিকার বাবা বলেছিলেন, সব সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকে এই মিউজিক ভিডিও, রিল মুছে ফেলতে হবে। কিন্তু তাতে রাজি হননি রাধিকা। ইনস্টাগ্রাম রিল নিয়ে বাবা-মেয়ের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই অশান্তি চলছিল। এই কারণেই রাধিকাককে খুন করে থাকতে পারেন তাঁর বাবা, অনুমান করছে পুলিশ।
পুলিশের জেরায় দীপক দাবি করেছেন, ‘আত্মীয়-পরিজন, প্রতিবেশীরা আমাকে বলত, মেয়ের টাকায় বসে খাচ্ছিস। রাধিকা যে টেনিস অ্যাকাডেমি চালাত, সেখান থেকে ভালো টাকাই উপার্জন করত। এতে অনেকেই ঈর্ষা করত। তারা আমাকে ব্যঙ্গ করত। আমি রাধিকাকে বলেছিলাম, টেনিস অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দিতে। কিন্তু ও আমার কথা শোনেনি। এই কারণেই ওকে মেরে ফেলেছি।’ তবে দীপকের এই দাবি সত্যি কিনা, সে বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-'মহিলা অফিসারদের স্যার বলা যাবে না', হাসিনার নিয়ম পালটাচ্ছে ইউনুস!
এতদিন জাতীয় স্তরে একাধিক প্রতিযোগিতায় রাজ্য ও দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন রাধিকা। বহু পদকও জিতেছিলেন। তবে চোটের কারণে কেরিয়ারে বাধা পড়ে। এরপর থেকেই নিজের পরিচিতির নতুন পথ খুঁজছিলেন।