ওবিসি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে 'ক্রিমি লেয়ার' কীভাবে নির্ধারণ করা হবে, সেখানে সংশ্লিষ্ট পরিবারের বেতনবাবদ প্রাপ্ত অর্থ আদৌ হিসাবের আওতায় আসবে কিনা, এসব নিয়ে বিতর্ক চলছে তো চলছেই।
আর, এসবের মধ্যেই এই বিষয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় প্যানেল প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ওই প্যানেলের সদস্যরা চাইছেন, বিশেষ কয়েকটি বিভাগে ওবিসি সংরক্ষণের উপর 'ক্রিমি লেয়ার' নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা 'ত্রুটি' এবার অন্তত 'সংশোধন' করুক কেন্দ্রীয় সরকার।
এই বিষয়ে নির্দিষ্ট যে অভিযোগ রয়েছে, তা হল - 'সমমর্যাদাসম্পন্ন পদে' নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। শীঘ্রই যা দূর করার উপর গুরুত্ব আরোপ করছেন প্যানেলের সদস্যরা।
একটি সূত্র উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সময় যাতে ওবিসি সংরক্ষণের সুবিধাপ্রাপ্তদের সঙ্গে কোনও বৈষম্য না করা হয়, তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
এক্ষেত্রে পিএসইউ, ব্যাঙ্ক, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে গ্রুপ এ, বি, সি এবং ডি-স্তরে নিয়োগের বিষয়গুলি উল্লেখ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সময় সংরক্ষণে ক্ষেত্রে যাতে বৈষম্য দূর করে সমতা আনা যায়, তার জন্য সবক'টি সরকারি বিভাগে এবং পরিষদে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে - ২০১৭ সালে একথা ঘোষণা করেছিল প্রথম মোদী সরকার।
তাদের বক্তব্য ছিল, ১৯৯৩ সাল থেকে এই বিতর্ক চলে আসছে এবং এবার তার স্থায়ী সমাধান করা হবে। যদিও বাস্তবে সেটা হয়নি বলেই অভিযোগ।
উপরন্তু, ২০১৭ সালে যখন এই তথাকথিত সাম্য আনার লক্ষ্যেই 'ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক এন্টারপ্রাইস' (ডিপিই) এবং 'ডিপার্টমেন্ট অফ ফিনানসিয়াল সার্ভিসেস' (ডিএফএস) কেন্দ্রীয় পিএসইউ এবং ব্যাঙ্কে নিয়োগের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করেছিল, তখন তা নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ে।
সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি একটি রিপোর্ট জমা করে। যার নাম - 'ব়্যাশেনালাইজেশন অফ ক্রিমি লেয়ার ইন এমপ্লয়মেন্ট অফ ওবিসিস'। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে ডিপিই এবং ডিএফএস 'সমতা' বজায় রাখতে যেসমস্ত পদক্ষেপ করেছিল, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ইতিমধ্যে সরকারের তরফে স্থির করা হয়, ওবিসি সংরক্ষণের আওতায় 'ক্রিমি লেয়ার' নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরিবারের বেতনবাবদ প্রাপ্ত অর্থও গ্রাহ্য করা হবে। যা নিয়ে তৈরি হয় নয়া বিতর্ক।
কারণ, ১৯৯৩ সালে ওবিসি সংরক্ষণ চালু করার সময় বলা হয়েছিল, 'ক্রিমি লেয়ার' নির্ধারণ করার সময় কখনই সেই পরিবারের বেতনবাবদ প্রাপ্ত অর্থ ও কৃষি থেকে উপার্জন করা অর্থ হিসাবের আওতায় আসবে না। কিন্তু, সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল এর উলটো।