অবশেষে গ্রেফতার হয়েছে ১৩ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার পিএনবি কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত তথা পলাতক হীরা ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি। বেলজিয়াম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, ভারতের অনুরোধেই বেলজিয়াম সরকার এই পদক্ষেপ করেছে। ৬৫ বছরের পলাতক ব্যবসায়ী আপাতত বেলজিয়ামের জেলে আছেন। তাঁর গ্রেফতারির জন্য বেলজিয়ামে আবেদন জানিয়েছিল ভারতের তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। জানা গিয়েছে, বেলজিয়াম থেকে সুইজারল্যান্ড চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।
আরও পড়ুন-টিট ফর ট্যাট! শুল্ক-বোমা মোকাবিলায় বেপরোয়া চিন, বিপাকে ট্রাম্প
ভারতীয় বংশোদ্ভূত হীরা ব্যবসায়ী ও গীতাঞ্জলি গ্রুপের প্রাক্তন কর্ণধার মেহুল চোকসি ২০১৮ সালে পিএনবির মুম্বইয়ের ব্র্যাডি হাউস শাখায় ঋণ জালিয়াতির মূল চক্রী হিসেবে অভিযুক্ত হন। এই কেলেঙ্কারিতে তাঁর ভাগ্নে নীরব মোদী, তাঁদের পরিবারের সদস্য, কর্মচারী এবং বেশ কিছু ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। চোকসি ২০১৮ সালেই ভারত থেকে পালিয়ে গিয়ে প্রথমে অ্যান্টিগুয়া এবং পরে বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। যেখানে বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। ২০২১ সালে তিনি অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য ডোমিনিকায় গ্রেফতার হন এবং দাবি করেন যে ভারতীয় এজেন্টরা তাঁকে অপহরণ করেছে। যদিও সেখানকার প্রশাসনের দাবি, চিকিৎসার জন্য সে দেশে গেলেও পরে মেহুল চোকসি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। জানা গিয়েছে, এবারও বেলজিয়াম থেকে সুইজারল্যান্ড চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। বেলজিয়াম পুলিশ গ্রেফতারের পর জানতে পারে, ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় সুইজারল্যান্ডের এক হাসপাতালে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল চোকসির। এর আগেও তাঁকে ভারতে প্রত্যার্পণ করার কথা বলা হয়েছিল। সেই সময়, তাঁর আইনজীবী চোকসির শারীরিক অসুস্থতার কথাই জানিয়েছিলেন। সেই অসুস্থতার দোহাই দিয়েই এবারও ফেরার হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।মুম্বইয়ের আদালতে চোকসির বিরুদ্ধে দু’টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। সেই পরোয়ানাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে।
দীর্ঘ সময় ধরে সিবিআই এবং ইডি তার খোঁজ চালাচ্ছিল। কোন দেশে তিনি রয়েছেন তার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছিল তারা। গত বছর তারা জানতে পারে, বেলজিয়ামে রয়েছেন মেহুল চোকসি। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানকার সংস্থাগুলিকে সতর্ক করা হয়। জালিয়াতির মামলা সম্পর্কিত সমস্ত নথিও পাঠানো হয়েছিল। এরপরেই সুইজারল্যান্ডে পালাবার বিষয়ে জানতে পারে সেখানকার পুলিশ।পলাতক ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্পে ছিলেন। স্ত্রী প্রীতি বেলজিয়ামের নাগরিক হওয়ায় সেখানকার 'রেসিডেন্সি কার্ড' পেয়েছে চোকসি। তাকে ভারতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল ভারত সরকার। অভিযোগ, বেলজিয়ামে বসবাসের জন্য ভুয়ো নথিপত্র ব্যবহার করেছেন এই পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী। বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষকে চোকসি নাগরিকত্ব সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। ভারত এবং অ্যান্টিগুয়ার নাগরিকত্বের বিবরণ দেয়নি। বেলজিয়ামে যাওয়ার আগে চোকসি অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডায়ও বসবাস করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন-টিট ফর ট্যাট! শুল্ক-বোমা মোকাবিলায় বেপরোয়া চিন, বিপাকে ট্রাম্প