ভারতের পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় কি পাকিস্তানের যোগ আছে? সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন খোদ পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার দীনেশ কানেরিয়া। সেইসঙ্গে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছেন, জঙ্গিদের লালন-পালন করছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আর সেজন্যই পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার একবারও নিন্দা করেননি। বরং পাকিস্তানি সেনা-সহ অন্যান্য সামরিক বাহিনীতে হাই-অ্যালার্ট জারি করে দিয়েছেন বলে শেহবাজকে আক্রমণ শানিয়েছেন কানেরিয়া। অর্থাৎ ঘুরিয়ে কানেরিয়া দাবি করেছেন যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এখন ভয় পাচ্ছেন। আর সেজন্যই জারি করেছেন হাই-অ্যালার্ট। তাঁর কথায়, ‘যদি সত্যিই পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের কোনও যোগ না থাকে, তাহলে কেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এখনও সেই ঘটনার নিন্দা করেননি? কেন আপনার বাহিনীতে আচমকা হাই-অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে? কারণ নিজের অন্তরে সত্যিটা জানেন যে আপনি জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছেন এবং তাদের লালন-পালন করছেন। লজ্জা হওয়া উচিত আপনার।’
পাকিস্তানের বিদেশ নীতি সন্ত্রাসবাদ, তোপের মুখে শেহবাজ
একইসুরে পাকিস্তান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টির নেতা জামিল মাকসুদ। ইসলামাবাদ যেভাবে জঙ্গিদের মদত জুগিয়ে আসছে, সেটার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। বেলজিয়ামের ব্রাসেলস থেকে সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে পাকিস্তান এখনও সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা ও মৌলবাদকে নিজেদের বিদেশ নীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে এবং এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ ছড়াচ্ছে।'
পাকিস্তানের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হোক, উঠল দাবি
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিরীহ পর্যটকদের উপরে যে নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে, সেটার তীব্র নিন্দা করছি। লস্কর-ই-তৈবা, দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট-সহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনকে মদত জোগানোর জন্য পাকিস্তানের উপরে যাতে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়, সেজন্য রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাছে আর্জি জানাচ্ছি। এই সমস্ত জঙ্গি সংগঠন পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী এবং পাকিস্তানি সরকারের আশীর্বাদ পাচ্ছে।’
পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার পরে বৈঠক মোদীদের
আর যে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে দীনেশরা পাকিস্তান সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন, সেই ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই পর্যটক। ভারতীয় নৌসেনার এক অফিসার, ভারতীয় বায়ুসেনার এক কর্পোরাল এবং ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) এক অফিসারের মৃত্যু হলেও তাঁরা কেউই ডিউটিতে ছিলেন না। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। অনেকের দাবি, কাশ্মীরের অর্থনীতিতে ধসিয়ে দিয়ে, কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের জীবন তছনছ করে দিতে সেই হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: Kashmir Attack Update: কফিনবন্দি দেহ ফিরল কলকাতায়, কাশ্মীরে জঙ্গির গুলিতে মৃত বাঙালি পর্যটকরাও
সেই পরিস্থিতিতে বুধবার সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সুরক্ষা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে হাজির ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রিরা। দু'ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সেই বৈঠক চলে।