রক্ত নিয়ে জল পাবে না - পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পরে পাকিস্তানকে স্পষ্ট বার্তা দিল ভারত। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সুরক্ষা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকের পরে নয়াদিল্লির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে স্থগিত করে দেওয়া হচ্ছে সিন্ধু জলচুক্তি। যতদিন না পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে লাগাম টানবে, ততদিন সেই চুক্তি স্থগিত থাকবে বলে ভারত সরকারে তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে আরও একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপ করা হয়েছে। তবে ২০১৬ সালে উরি হামলার পরে চালানো সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পরে চালানো এয়ার স্ট্রাইকের মতো এবার কোনও সামরিক পদক্ষেপ করা হবে কিনা, তা অবশ্য জানানো হয়নি (সেটা অবশ্য বলার কথাও নয়)।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে?
১) ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, ‘১৯৬০ সালে সিন্ধু জলচুক্তি রদ করে দেওয়া হচ্ছে এখন থেকেই। যতদিন না পাকিস্তান বিশ্বাসযোগ্যভাবে এবং পুরোপুরি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করছে, (ততদিন সিন্ধু জলচুক্তি রদ থাকবে।)’
যতক্ষণ না পাকিস্তান বিশ্বাসযোগ্যভাবে এবং অকাট্যভাবে সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রতি তার সমর্থন প্রত্যাখ্যান করে
২) ভারতের বিদেশ সচিব বলেছেন, ‘অবিলম্বে আটারির ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা বৈধ নথি নিয়ে সীমান্ত পেরিয়েছেন, তাঁরা আগামী ১ মে'র আগে পর্যন্ত ওই রুট দিয়ে ফিরে যেতে পারবেন। ’
৩) বিদেশ সচিব মিশ্রি বলেছেন, ‘সার্ক ভিসা প্রকল্পের আওতায় পাকিস্তানিরা ভারতে আসতে পারবেন না। অতীতে কোনও পাকিস্তানি নাগরিককে সার্ক ভিসা প্রকল্পের আওতায় ভিসা দেওয়া হয়ে থাকলে সেটি বাতিল বলে বিবেচনা করা হবে। ওই ভিসার আওতায় কোনও পাকিস্তানি যদি এখন ভারতে থাকেন, তাহলে তাঁকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।’
৪) ভারতের বিদেশ সচিব জানিয়েছেন, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনে প্রতিরক্ষা, সেনা, নৌসেনা এবং বায়ুসেনার কোনও উপদেষ্টা থাকলে তাঁকে অবাঞ্চিত হিসেবে ধরা হবে। তাঁদের এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছেড়ে চলে যেতে হবে। একইভাবে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনে সেই পদে যে উপদেষ্টারা আছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। ওই ধরনের সামরিক পরামর্শদাতাদের সমস্ত পদ খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে।
সেইসঙ্গে ভারতের বিদেশ সচিব জানিয়েছেন, দু'দেশেরই হাইকমিশন থেকে এরকম ‘সার্ভিস অ্যাডভাইজার’-দের (সামরিক পরামর্শদাতা) পাঁচ সদস্যকে ফিরিয়ে নিতে হবে। আপাতত হাইকমিশনের কর্মী সংখ্যা ধাপে ধাপে কমিয়ে ৫৫ থেকে ৩০ করা হবে। যে বিষয়টি কার্যকর হবে ১ মে থেকে।
জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তি ও উন্নয়ন দেখেই হামলা
আর ভারত সরকারের তরফে সেই রণংদেহী মেজাজে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে, সেটার নেপথ্যে আছে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলা। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালির মৃত্যু হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে যে শান্তিপূর্ণভাবে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যে উন্নয়ন হচ্ছে, সেটার জন্যই এই হামলা চালানো হয়েছে।