আদ্যোপান্ত যাকে বলে ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি। ‘বছরে বেশ কয়েকবার ঘুরতে যেতেন সপরিবারে। এমনিতে ছিলেন মিষ্টভাষী, অমায়িক ও ভদ্র। তাঁর সঙ্গে এমনটা হয়েছে, এখনও ভাবতে পারছি না।’ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী সমীর গুহ। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে তাঁর কথা বলতে বলতেই মনখারাপে ভেঙে পড়েছিলেন তাঁর প্রতিবেশী ফ্ল্যাটের বাসিন্দা অর্চনা জগন্দর। তাঁর কথায়, দিদিকে খবরটা পেয়েই ফোন করেছিলাম গতকাল। কিন্তু কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই। শুধু হাউ হাউ করে কান্না।’
‘অনেকদিন ধরেই ওঁরা বলছিলেন’
ফ্ল্যাটে থাকলেও তথাকথিত ফ্ল্যাট কালচার ছিল না সমীরবাবুর ঠিকানায়। ফ্ল্যাটের সকলেই সকলের সঙ্গে মিলে মিশে থাকতেন যেন একটা পরিবার। সেই পরিবারেই আচমকা এমন অন্ধকার নেমে আসবে, ভাবতে পারেননি প্রিয়াঙ্কাও। সমীরের আরেক প্রতিবেশী প্রিয়াঙ্কার কথায়, ‘দাদা ভীষণ ভালো মানুষ ছিলেন। ভালো লাগার মধ্যে শুধু ঘুরতে যেতে পছন্দ করতেন খুব। অনেকদিন ধরেই ওঁরা বলছিলেন, এবার কাশ্মীরটা ঘুরে এলে হয়। শেষমেশ সেইমাফিক প্ল্যানও করেছিলেন। কিন্তু কাশ্মীরই এত অন্ধকার এনে দিল একটা পরিবারে…!’
আরও পড়ুন - Pahalgam Terror Attack: কাশ্মীর যাওয়ার সখ ছিল বহু দিনের, ভূস্বর্গে রক্ত দিয়েই চিরনিদ্রায় কলকাতার বিতান
মোদী কা আদমি হ্যায়?
অর্চনার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে সমীরের কন্যার। তিনিই অর্চনাকে বলেন কীভাবে ঘটেছিল গোটা ঘটনা। সদ্য আইএসসি ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষা দিয়েছে সে। পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরেই ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হয়েছিল। অর্চনা HT বাংলাকে বললেন, ‘ফোনে ও বলল, বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিল, মোদী কা আদমি হ্যায়? ওর বাবা হ্যাঁ বলতেই সঙ্গে সঙ্গে গুলি।’
বাবার জন্মদিনে প্ল্যান
প্রিয়াঙ্কার কথায়, ‘দাদার মেয়ে খুব মিশুকে আর ওর বাবার খুব কাছের। সবসময় দাদার জন্মদিনে আগে থেকে প্ল্যান করত নতুন কী করা যায়। যেমনটা বাবার জন্য মেয়েরা করে থাকে সাধারণত। সেই তাকেই এই বয়সে চোখের সামনে বাবার মৃত্যু দেখতে হল। সারাজীবনের মতো দাগ কেটে গেল এই ঘটনা। কে নেবে এর দায়ভার?’