মহম্মদ ইউনুসরা গোপনে ‘স্বাধীনতা-বিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে’ মদত জোগাচ্ছে। এমনই অভিযোগ করলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বিবৃতি জারি হাসিনা অভিযোগ করেন, ‘এই সরকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়নি। তাই মানুষের প্রতি ওদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধ বাহিনীর কণ্ঠস্বর দমিয়ে দেওয়াই হল ওদের মূল উদ্দেশ্য। অন্যদিকে ওরা গোপনে স্বাধীনতা-বিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সমর্থন করছে। ফ্যাসিস্ট ইউনুস-সহ এই সরকারের প্রত্যেক নেতার মুক্তিযুদ্ধের প্রতি যে সংবেদনশীলতার অভাব আছে, সেটা ওদের প্রতিটি পদক্ষেপে বোঝা যায়।’
তবে হাসিনার সেই আক্রমণ নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফে আপাতত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সোমবার ‘বিজয় দিবস’ পালনের আগে আবেগকে হাতিয়ার করে ইউনুসদের উপরে কিছুটা চাপ তৈরি করতে চাইছেন হাসিনা। যে দিনটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বরেই পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল।
‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা লক্ষ্য ছিল, দাবি হাসিনার
সেই পরিস্থিতিতে ইউনুস সরকার যখন ‘জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্র থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন’ মুছে দিতে চাইছে, তখন বাংলাদেশের সংগ্রামে বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং আওয়ামি লিগের অবদানের কথা বাংলাদেশিদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন হাসিনা। তিনি দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটার পথেই হেঁটে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে যাচ্ছিল আওয়ামি লিগের সরকার। যে বাংলাদেশে কেউ গরিব বা কেউ অভুক্ত থাকতেন না। কিন্তু 'অগণতান্ত্রিক' ইউনুস সরকার সেই স্বপ্নের জলাঞ্জলি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন হাসিনা।
তাঁকে ফেলতে বৈদেশিক চক্রান্ত, দাবি হাসিনার
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, 'মানুষের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা নেই ফ্যাসিস্ট ইউনুসের নেতৃত্বধীন অগণতান্ত্রিক গোষ্ঠীর। ওরা স্রেফ নিজেদের হাতে ক্ষমতা তুলে নিচ্ছে। আর সমস্ত জনকল্যাণমূলক কাজ আটকে দিচ্ছে।' শুধু তাই নয়, হাসিনা অভিযোগ করেছেন, 'অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক চক্রান্তের মাধ্যমে বেআইনি এবং অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে।'
কলকাতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল
আর হাসিনার সেই আক্রমণের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধ উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসে গিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। প্রতিবারের মতো এবারও কলকাতায় 'বিজয় দিবস' পালন করা হবে। এখন বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি, তাতে প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল যে বাংলাদেশের কোনও প্রতিনিধি কলকাতায় আসবেন না। যদিও শেষপর্যন্ত কলকাতায় এসেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।