সংসদের ভবনের কাছেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলেন এক যুবক! বুধবার এই ঘটনা ঘিরে প্রবল চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজধানী দিল্লিতে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই যুবককে ইতিমধ্যেই স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগুনে পুড়ে তিনি গুরুতর জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
তবে, ঠিক কী কারণে ওই যুবক এমন কাণ্ড ঘটালেন, সেটা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঠিক যে জায়গায় ওই যুবক গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, সেই ঘটনাস্থল পুলিশের তরফ থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আত্মহত্যার চেষ্টা করা যুবককে চিকিৎসার জন্য আরএমএল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে ওই যুবকের নাম ও পরিচয়ও প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। পুলিশের তরফে প্রাথমিকভাবে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেই অনুসারে - ওই যুবকের নাম সম্ভবত - জিতেন্দ্র। এবং তিনি উত্তরপ্রদেশের বাগপতের বাসিন্দা হতে পারেন।
দিল্লি পুলিশের তরফে আরও যা জানানো হয়েছে, তা হল - 'আজ এক ব্যক্তি গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। রেলভবনের গোলচত্বরে ঘটনাটি ঘটেছে। যে ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, তাঁর নাম সম্ভবত জিতেন্দ্র এবং তিনি উত্তরপ্রদেশের বাগপতের বাসিন্দা হতে পারেন।...'
'...যে মুহূর্তে ওই ব্যক্তি নিজের গায়ে আগুন ধরান, সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাঁচাতে ছুটে যান সেখানে উপস্থিত রেল পুলিশ ও স্থানীয় থানার পুলিশের কর্তব্যরত কর্মী ও আধিকারিকরা। ছুটে আসেন আশপাশে থাকা সাধারণ মানুষজনও। সকলের প্রচেষ্টায় তাঁকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।'
'...প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বাগপতের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও ঘটনার জেরেই ওই ব্যক্তি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এবং বাগপতে হয়তো তাঁর কোনও ব্যক্তিগত শত্রু রয়েছে। আমরা এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি।'
ইন্ডিয়া টিভি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আত্মহত্যার চেষ্টা করা ওই যুবকের অবস্থা যথেষ্ট গুরুতর। কারণ, তাঁর শরীরের ৯০ শতাংশ অংশই পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ডায়ারি উদ্ধার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, দুই পৃষ্ঠা জুড়ে লেখা একটি চিঠিও পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ওই চিঠিটিই আসলে ওই যুবকের সুইসাইড নোট। পুলিশ সেগুলি খতিয়ে দেখছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় একই রকমের একটি ঘটনা ঘটেছিল ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে। সংসদ ভবনের খুব কাছেই গায়ে আগুন লাগিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছিল পরিবহণ ভবনের কাছে। ওই ব্যক্তি ছিলেন রোহিনীর বাসিন্দা।
সেই সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তি নাকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এবং রাহুল গান্ধীর পক্ষে জোর গলায় স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরবর্তীতে জানা যায়, করোনাকালে লকডাউনের জেরে ওই ব্যক্তি নিজের চাকরি হারিয়েছিলেন।
স্লোগান দিতে দিতেই তিনি নিজের গায়ে কোনও এক ধরনের তরল দাহ্য পদার্থ ঢালেন। আর তারপর নিজেই নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন। পিটিআই সূত্রে খবর, এই ঘটনার পরই ওই ব্যক্তিকে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ অংশ পুড়ে গিয়েছিল।